অষ্টমী অবধিও আনন্দে ছিলেন, শেষপর্যন্ত যুবভারতিতে বসে ডার্বি দেখা হলো না মোহনবাগানের একনিষ্ঠ সমর্থক অনির্বাণের

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: সেই জুলাই মাস থেকে তার লড়াই চলে আসছিল। ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন ৫ মাসের মধ্যেই কিডনি প্রতিস্থাপন না করতে পারলে খুবই সমস্যা হবে। চিকিৎসার জন্য ভেলোরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু অবশেষে সব লড়াই শেষ হলো। শুক্রবার সকালেই ইহলোকের মায়া কাটিয়ে পরলোক যাত্রা করলেন একনিষ্ঠ মোহনবাগান সমর্থক অনির্বাণ নন্দী।

জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো দাদাগিরির মঞ্চে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে একটি পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মাথায় অল্প চুল, মুখে একগাল হাসি লেগে থাকা অনির্বাণ যখন জানতে পেরেছিলেন যে কিডনি প্রতিস্থাপন করাতেই হবে তখন সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছিলেন যে সেই চিকিৎসার যা খরচা তা তার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না। তিনি বাবা, মা হীন একজন মানুষ, একাই থাকেন। তার পক্ষে কোনওভাবেই চিকিৎসার খরচ জোগাড় করা সম্ভব ছিল না।

এই অবস্থায় তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল তার প্রাণপ্রিয় মোহনবাগান ক্লাবের সমর্থকরা। অবশ্য শুধু সবুজ মেরুন ক্লাব নয়, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান ক্লাবের কিছু সমর্থকও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। প্রয়োজন ছিল ১৫-১৬ লক্ষ টাকার। অনেক চেষ্টা করেও পুরোটা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি সমর্থকদের পক্ষে। ফলে যে খারাপখবরটি শুনতে হবে আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে সেটাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো।

অনির্বাণের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে কলকাতা ময়দান প্রেমীদের মনে। অনেকেই বলেছেন যে মোহনবাগান ক্লাব থেকে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হলেও ক্লাবের কিছু সমর্থকরা ছাড়া ক্লাব প্রত্যক্ষভাবে কোনও উদ্যোগ নেয়নি তার পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে। তবে সেই সব বিতর্কের আজ আর কোনও মানে নেই।

গ্যালারিতে যে মেরিনার্সদের সাথে বসে খেলা দেখতেন তারা আজ শোক বিহ্বল। তাদের প্রিয় নন্দী দা আর নেই এই কথা যেন সকলের বিশ্বাসই হচ্ছে না। অসুস্থ শরীর নিয়ে পুজোয় আনন্দে মেতে ছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দুর্গা ঠাকুর দেখতে যাওয়ার বিভিন্ন ছবিও পোস্ট করেছিলেন অনির্বাণ। সকলকে জানিয়েছিলেন অষ্টমীর শুভেচ্ছাও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মা দুর্গা তার ভাগ্য ফেরাতে পারলেন না। তিনি মারা যাওয়ার পর শিল্টন পালের মত অনেক প্রাক্তন ফুটবলারও সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকজ্ঞাপন করেছেন।

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর