বাংলাহান্ট ডেস্ক : অবশেষে জীবন যুদ্ধের অবসান! লাগাতার বারোটা দিন মরণপণ লড়াই করার পর মৃত্যুর কাছে হার মানতে বাধ্য হল ময়নাগুড়ির নির্যাতিতা কিশোরী। সোমবার ভোর নাগাদ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে ছোট্ট মেয়েটি। ঘটনার জেরে শোকে কার্যতই পাথর কিশোরীর পরিবার। অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নাগাদ স্থানীয় কয়েকজন যুবক কিশোরীর শ্লীলতাহানি করে। ঘটনার পর থানাতে অভিযোগও দায়ের করেছিল নির্যাতিতার পরিবার। কিন্তু সেভাবে কোনও ফলই হয়নি। সেই অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হলেও কয়েক দিনের মধ্যে জামিনে মুক্তি পায় একজন। এরপরই গত ১৩ এপ্রিল কিশোরীর বাড়িতে চড়াও হয়ে চলে হুমকি। থানায় অভিযোগ প্রত্যাহার করে না নিলে ফল ভালো হবে না বলেও চলে শাসাশাসনি। এই সমস্ত কিছুই ফলে আরও ভয়াবহ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে নাবালিকা।
এই চূড়ান্ত মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে গত ১৪ এপ্রিল গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। তারপর সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটায় সেদিনই কিশোরীকে স্থানান্তরিত করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেই চলছিল তার চিকিৎসা। টানা ১২ দিন লড়াইয়ের পর এদিন ভোরেই শেষ হল মেয়েটির সব যুদ্ধ।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও নাবালিকা মেয়ের এহেন মৃত্যুর পর আর পুলিশে ভরসা রাখতে মোটেই পারছে না পরিবার। নির্যাতিতা কিশোরীর বাবার কথায়, ‘পুলিশে ভরসা নেই আমাদের। মেয়ের উপর যে অত্যাচার হয়েছে তার জন্য সিবিআই তদন্ত চাই আমরা। দরকার হলে আদালতে যাব। কিন্তু শেষ না দেখে ছাড়ব না।’ ঘটনায় যে তীব্র শোকের ছায়া এলাকায় তা বলাই বাহুল্য।