বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিরাট সাফল্য (Success Story) কখনও এক দিনে আসে না, একটি স্বপ্ন দিয়ে শুরু হয় এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার নিরন্তর প্রচেষ্টাই শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়ে। মুদ্রা গাইরোলার যাত্রাও তার ব্যতিক্রম নয়। বাবার স্বপ্ন ছিল আইএএস হওয়া, কিন্তু তা তিনি পূরণ করতে না পারলেও মেয়ে মুদ্রা সেই স্বপ্নকে নিজের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন। দন্তচিকিৎসায় পড়াশোনা চলাকালীনই তিনি বুঝেছিলেন যে তাঁর প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা দেশের সেবায় যুক্ত হওয়া। তাই মেডিকেলের নিরাপদ ও প্রতিষ্ঠিত পথ ছেড়ে তিনি ইউপিএসসির কঠিন, অনিশ্চিত পথ বেছে নেন। দৃঢ় সংকল্প এমনই ছিল যে তিনি নিজেকে দু’বার প্রমাণ করেছেন—প্রথমে আইপিএস হয়ে এবং পরে আইএএস হয়ে।
মুদ্রা গাইরোলার অসাধারণ সাফল্যের কাহিনি (Success Story):
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার বাসিন্দা মুদ্রা ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধার পরিচয় দিয়েছেন। সিবিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তিনি ৯৬ শতাংশ নম্বর পান এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে আরও উন্নত ফল করে ৯৭ শতাংশ নম্বর অর্জন করেন। স্কুলের দুর্দান্ত ফলাফলের পর তিনি দন্তচিকিৎসায় উচ্চশিক্ষার জন্য বিডিএস কোর্সে ভর্তি হন। সেখানে তাঁর পারফরম্যান্স এতই অসাধারণ ছিল যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। তবুও মুদ্রার মন পড়ে ছিল সিভিল সার্ভিসে—যেখানে তাঁর বাবা অরুণ গাইরোলার অপূর্ণ স্বপ্ন লুকিয়ে ছিল। বাবার সেই স্বপ্নকে নিজের লক্ষ্য বানিয়ে তিনি দৃঢ় মনোযোগে ইউপিএসসির প্রস্তুতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন (Success Story)।
আরও পড়ুন:পিএম কিষানের কিস্তি আটকে আছে? অনলাইনে ফর্ম আপডেটেই মিলবে সমাধান, জেনে নিন ২০২৫-এর নিয়ম
মুদ্রা প্রথম ইউপিএসসিতে বসেন ২০১৮ সালে। সেই বছর তিনি লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ—দুই পর্যায়ই পেরোলেও চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাননি। ব্যর্থতার পরও তিনি হাল ছাড়েননি। ২০১৯ এবং ২০২০—দুই বছরই চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাফল্য (Success Story) আসেনি। তবুও তাঁর যাত্রা থামেনি। পরিবার ছিল তাঁর শক্তি, বিশেষ করে বাবার অটুট বিশ্বাস তাঁকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। কঠিন মুহূর্তে এই সমর্থনই তাঁকে স্থির রেখেছিল এবং নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়ার সাহস দিয়েছে।
অবশেষে ২০২১ সালে তাঁর পরিশ্রম রূপ নেয় সাফল্যে (Success Story)। চতুর্থ প্রচেষ্টায় তিনি অল ইন্ডিয়া র্যাঙ্ক ১৬৫ অর্জন করেন এবং আইপিএস অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে আইপিএস পদ পাওয়া সত্ত্বেও তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না, কারণ তাঁর ও তাঁর বাবার চূড়ান্ত স্বপ্ন ছিল আইএএস। তাই প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আবারও প্রস্তুতি চালিয়ে যান। ২০২৩ সালে তিনি পুনরায় পরীক্ষায় বসেন এবং এবার অসাধারণ ফল করেন—অল ইন্ডিয়া র্যাঙ্ক ৫৩। এই ফল তাঁর পরিবারের বহু বছরের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে এবং মুদ্রাকে দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে পৌঁছে দেয়।

আরও পড়ুন:রাস্তা সংস্কারে নয়া দাওয়াই! কড়া নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের
মুদ্রা গাইরোলার এই সাফল্য (Success Story) কেবল ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি এক পরিবারের দীর্ঘ লড়াই, সংকল্প এবং আত্মবিশ্বাসের ফল। বহুবার ব্যর্থ হওয়ার পরও কীভাবে লক্ষ্যচ্যুত না হয়ে নতুন করে লড়াই করা যায়, সেই অনুপ্রেরণাদায়ক দৃষ্টান্ত তিনি স্থাপন করেছেন। তাঁর গল্প আজ অসংখ্য ইউপিএসসি প্রার্থীর কাছে প্রেরণা—যারা বিশ্বাস করেন, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় থাকলে স্বপ্ন কখনও দূরে থাকে না।












