মুকেশ মিকি জগতিয়ানি ( mukesh micky jagtiani) এমন একজন মানুষ যিনি ভারতের কয়েক লাখ দরিদ্র বেকার যুবকের রোল মডেল হতে পারে।
একসময় পয়সার জন্য মানুষটি ট্যাক্সি চালিয়েছেন, নিতে বাধ্য হয়েছেন হোটেলের রুম বয়ের কাজও। কিন্তু আজ তিনি ফোর্বসের ১০ ধনী ভারতীয়দের তালিকায় তিনি দশম স্থানে রয়েছেন।
মিকি জগতিয়ানি দুবাই-ভিত্তিক খুচরা চেইন ল্যান্ডমার্ক গ্রুপের মালিক। তিনি কুয়েতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর পরিবার এখানেই থাকত। চেন্নাই, মুম্বই এবং বৈরুটে পড়াশোনা করেন।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি লন্ডনে চলে যান এবং সেখানে অ্যাকাউন্টিং নিয়ে পড়া শুরু করেন। এই সময় নিজের খরচ জোগাতে তিনি ট্যাক্সি চালাতেন। যদিও কোনো কারন বশত তিনি পড়াশোনা শেষ করতে পারেন নি।
এরপর তিনি বাহরিনে রুম সার্ভিস হিসাবে কাজ করেছেন। এসময় তার ভাই কুয়েতে মারা যান। ফলে গোটা পরিবারের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে এসে পড়ে।
এর কয়েক বছরের মধ্যেই তার বাবা এবং মাও ক্যান্সারে মারা গিয়েছিলেন। মাত্র তিন বছরের মধ্যে সমস্ত পরিবার হারিয়ে তিনি একা হয়ে যান।
মাত্র ২০ বছর বয়সে এত বড় ঝড় বয়ে গেলেও হাল ছাড়েন নি তিনি। অসুস্থ হওয়ার আগে তার ভাই বাহরিনে একটি দোকান ভাড়া নিয়েছিলেন।
সেখানেই পারিবারিক সঞ্চয় মাত্র ৪ লাখ টাকা দিয়ে তিনি ব্যাবসা শুরু করেন। এই ব্যাবসাটি তিনি প্রায় ১০ বছর চালান। পরে একই রকম আরো ৬ টি দোকান খোলেন৷ যেখানে ১০০ জনের বেশি মানুষ কাজ করত
১৯৯২ সালে উপসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে মিকি তার ব্যবসা দুবাইয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং স্ত্রী রেণুকার সাথে দুবাই চলে যান। দুবাইতে ল্যান্ডমার্ক গ্রুপ শুরু করেন। এই সংস্থাটি মধ্য প্রাচ্য, আফ্রিকা এবং ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।
তারা ল্যান্ডমার্ক গ্রুপের অধীনে বাচ্চাদের পোশাক এবং খেলনা রফতানি করেছিল। যা এখন বিশাল চেহারা নিয়েছে। খেলনা ছাড়াও এখন এই সংস্থা ফ্যাশন, বৈদ্যুতিন, আসবাব এবং হোটেল ব্যাবসাতেও মন দিয়েছে। এশিয়া থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত ল্যান্ডমার্ক গ্রুপের ২৩০০ স্টোর রয়েছে।
২০০০ সালে, মিকি ল্যান্ডমার্ক ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন নামে একটি দাতব্য ট্রাস্ট তৈরি করেছিলেন। এর আওতায় ভারতে এক লাখ শিশুর লেখাপড়া ও ওষুধের জন্য ব্যয় নেওয়া হয়। শুধু এটিই নয়, এই প্রতিষ্ঠানটি চেন্নাইয়ের বস্তি এবং একটি বৃদ্ধাশ্রমের একটি কমিউনিটি ক্লিনিকও পরিচালনা করে।