বাংলা হান্ট ডেস্ক : সম্প্রতি খবরের শিরোনামে চলে এসেছেন কলকাতা (Kolkata) পুলিশের এক মুসলিম কনস্টেবল (Muslim Constable)। শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসকে (Ramkrishna) উৎসর্গীকৃত একটি মন্দির তৈরি করতে তার জীবনের সমস্ত সঞ্চয়ের একটা বড় অংশ ব্যায় করছেন। তার নাম আব্দুল কালাম খান। উল্লেখ্য, কলকাতা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়ার বাখাটি গ্রামে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
মন্দির প্রসঙ্গে আব্দুল কালাম খান বলেন, ‘এটি নিছক মন্দির নয় যেখানে একটি পূজা অনুষ্ঠিত হবে এবং তারপরে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই মন্দিরটি ঠাকুর (শ্রী রামকৃষ্ণ) প্রচারিত আদর্শ অনুসরণ করে দরিদ্র ও দুস্থদের সেবায় নিবেদিত হবে।’ এইদিন তিনি আরও বলেন, ‘আমি সর্বদা ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের পাঠ অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি, যিনি তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে পার্থক্য করেননি এবং জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সাথে সমান আচরণে বিশ্বাসী ছিলেন।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই মন্দিরটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। যার মধ্যে ১৮ লক্ষ টাকা দিয়েছেন কালাম নিজেই। বাকি টাকা জোগাড় করেছে এলাকার বাসিন্দারা। টাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে খান বলেন, ‘আমার প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে ২২ লক্ষ টাকা ছিল যা ২৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে জমা হয়েছে। আমি মন্দিরের জন্য অ্যাকাউন্ট থেকে ১৮ লাখ টাকা তুলে নিয়েছি।’
আরও পড়ুন : গায়ের পোশাক খুলে ছুঁড়ে মারলেন অরিজিৎ-র দিকে, মহিলা ভক্তের কাণ্ড দেখে ‘থ’ গায়ক
তিনি জানিয়েছেন, এই মন্দিরের নিচতলায় একটি হলে বিনামূল্যে দাতব্য ক্লিনিক এবং একটি বিনামূল্যে কোচিং ক্লাস চালানো হবে। সূত্রের খবর, খানের পরিবারে রয়েছে দুই মেয়ে এবং স্ত্রী। তার বড় মেয়ে যাদবপুরের কেপিসি মেডিকেল কলেজে নার্সিং কোর্স করছেন এবং ছোট মেয়ে ব্যাঙ্গালোরে একটি নার্সিং কোর্সে ভর্তি হয়েছে৷ তার স্ত্রী একজন গৃহিণী।
আরও পড়ুন : ‘দিদি নং ওয়ান ইন ট্রু সেন্স’, ডোনা-রচনার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মঞ্চ মাতালেন মমতা ব্যানার্জি
পুলিশে যোগ দেওয়ার আগে আব্দুল কালাম খান কুলির কাজ করতেন। বিদ্যাসাগর সেতু নির্মাণের সময়ও কুলির কাজ করেছেন তিনি। টাকাপয়সার অভাবে সেই সময় তিনি মাধ্যমিকের আর পড়াশোনা করতে পারেননি। এইদিন তিনি বলেন,“আমি শিক্ষার গুরুত্ব জানি। এটি একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত দিতে পারে। আমি চাই মন্দিরটি তাদের বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের মিশন চালিয়ে যাবে যারা এটি বহন করতে পারে না কারণ শুধুমাত্র শিক্ষাই পরিবর্তন করতে পারে।’