বাংলাহান্ট ডেস্ক : যুগের পর যুগ ধরে ভারতবর্ষ সাক্ষী থেকেছে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যর। আমাদের দেশের নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধানের মধ্যে নানান জাতির উৎসবও মেতে উঠেছে নানা বর্ণ-ধর্মের সমন্বয়ের রঙে। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের লক্ষ্যে এবারের দুর্গাপুজোয় অভিনব উদ্যোগ নিল নিউ টাউনের মৃত্তিকা ক্লাবের পুজো কমিটি।
এবার কুমারী পুজোয় তারা আরাধনা করবে একটি মুসলিম কন্যার। ক্লাবের মহিলাদের সমিতি জানিয়েছে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যর বার্তা দিতে এবার তাঁরা এক মুসলিম মেয়েকে কুমারী পুজো করতে চলেছেন। মৃত্তিকা ক্লাবের মহিলাদের সমিতি পাথুরিয়াঘাটার বাসিন্দা ৮ বছর বয়সি নাফিসাকে বেছে নিয়েছে কুমারী পুজোর জন্য।
আরোও পড়ুন : পুজোর ভিড় সামলাতে দুর্দান্ত উদ্যোগ রেলের! চলবে ১৮ পুজো স্পেশাল লোকাল, জানুন রুট, সময়
ক্লাবের এক সদস্য জানিয়েছেন, “আমাদের মূল উদ্দেশ্য ঐক্যের প্রচার, সমাজের প্রত্যেকটি জায়গা থেকে ভেদাভেদ দূর করে শক্তিশালী ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেওয়া। আগের দুর্গা পুজোর কমিটিতে আমরা নিজেরাই শিকার হয়েছিলাম বিভাজনের। আমাদের মনে হয়েছিল সেখানে উপেক্ষিত হচ্ছেন নারীরা। তাই আমরা তৈরি করি আমাদের নতুন সংগঠন। এবার নিজের আয়োজন করেছি পুজোর।”
আরোও পড়ুন: পুজোতে বসে বসে হবে আয়, মদের দোকানের লাইসেন্স দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, এভাবে করুন আবেদন
কুমারী পুজোতে মূলত লাগে ব্রাহ্মণ পরিবারের কন্যাদের। তবে ১৮৯৮ সালে স্বামী বিবেকানন্দ বেড়াতে যান ডাল লেকের একটি হাউসবোটে। সেখানকার মাঝি ছিলেন এক মুসলমান। ওই মুসলমান মাঝি স্বামী বিবেকানন্দের দেখভাল করছিলেন। ওই মুসলমান মাঝির এক কন্যা সন্তান ছিল যাকে বিবেকানন্দ খুব স্নেহ করতেন।
দেবী দুর্গা রূপে পুজো করা হয় তাঁকে। শ্রীনগরে কুমারী পুজো দেন বিবেকানন্দ। আচারের অংশ হিসেবে বিবেকানন্দ সেই ছোট্ট মেয়েটির পা স্পর্শ করে প্রণাম করেন। এই ক্লাবের এক সদস্য জানিয়েছেন,”আমাদের মধ্যে অনেকেই বেলুর মঠের শিক্ষায় শিক্ষিত। এক শতাব্দী আগে স্বামী বিবেকানন্দ যদি মুসলমান কন্যার কুমারী পুজো করেন ,তাহলে কেন আমরা পারব না!”