বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমরা সকলেই জানি ধর্ম নিয়ে বহু মতবিরোধ রয়েছে আমাদের দেশে। এই ধর্ম কখনো মানুষকে এক করে না সব সময় মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। কিন্তু কোন ধর্মীয় উৎসবকে জনকল্যাণে কাজে লাগানো, এ যেন এক অভিনব বিষয়। ঠিক সেইভাবেই ত্যাগের উৎসব মহরমে নজির গড়লেন চার বন্ধু। পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটের সমুদ্রগড় ডাঙাপাড়ার ৪ যুবক শাহিদ শেখ, সারাফত শেখ, আবদুল্লা শেখ ও ইবাদত শেখ মঙ্গলবার রক্তদান করে মহরম উৎসব পালন করলেন।
তাদের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকল এলাকাবাসীরা। এলাকার বাসিন্দা কালো শেখ, আরতি খানরা বলছিলেন, ‘টিভি খুললে বা খবরের কাগজে চোখ রাখলে শুধু রক্ত ঝরানোর খবরই দেখি, তার উল্টোপিঠে দাঁড়িয়ে রক্তদান করে মহরম উৎসবটারই কৌলিন্য বাড়ালেন শাহিদ–সারাফত। দৃষ্টান্তও সৃষ্টি করলেন।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেই পালন করা হয় মহরম উৎসব। এমনকি এদিন মহরম উপলক্ষে তাজিয়া, আখড়া ও ঢাল নিয়ে আলাদা আলাদা শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল নামে পূর্ব বর্ধমানের বিসি রোডে। এদিন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এখানকার রানিগঞ্জ মোড়ের কাছে ঐতিহাসিক কালাপাহাড়ির মাজারে চাদর চড়ান।
নাদনঘাটের মতো এমনই ঘটনার নজির পাওয়া গেছে মুর্শিদাবাদেও। সেখানেও ধর্মের ঊর্ধ্বে মানব ধর্মকে প্রাধান্য দিয়েছেন এক যুবক। এই যুবক মহরম এর অনুষ্ঠানে না থেকে, কোনরকম আনন্দ-ফূর্তি বা অনুষ্ঠান পালন না করে অসুস্থ এক রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন রক্ত দান করে। মহম্মদ তৌফিক হোসেন নামে, বছর ২৫ এর এই যুবক দুর্দিনে একজন অসুস্থ থ্যালাসেমিয়া রোগীর পাশে দাঁড়ালেন উৎসবের মরসুমে তাচ্ছিল্য করে।
মঙ্গলবার যখন একদিকে চলছে মহরম এর হই হই কান্ড, তখনই অন্যদিকে বেলডাঙার ওই অসুস্থ মহিলা সেরিনা বিবিকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসেন তিনি। শুধু তাই নয় সেখানে পৌঁছে নিজের শরীর থেকে রক্ত দিয়ে তার চিকিৎসায় সাহায্য করেন তিনি। এদিন মহরম উপলক্ষে পুরুলিয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন রেখে লাঠি খেলায় অংশ নেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় ব্যানার্জি। এছাড়া মহরম উপলক্ষে তাজিয়া নিয়ে শোভাযাত্রা বের হয় পশ্চিম মেদিনীপুরেও।