বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রাথমিকতা ছিল, দেশে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বন্ধ করে মুসলিম মহিলাদের বৈবাহিক জীবনে শান্তি ফিরিয়ে দেওয়ার। আর এর জন্য লোকসভায় তিন তালাক বিল পেশ করেছিল মোদী সরকার। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার ফলে সহজেই লোকসভা থেকে তিন তালাক বিল পাশ করিয়ে নিয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু মোদী সরকারের প্রথম কার্যকালে দুইবার রাজ্যসভায় তিন তালাক বিল মুখ থুবড়ে পড়ে। কারণ রাজ্যসভায় মোদী সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিলনা।
নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর আবারও লোকসভা তিন তালাক বিল পেশ করে মোদী সরকার। এবারও লোকসভায় সহজেই তিন তালাক বিল পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। এরপর এই বিল যায় সংসদের উচ্চ ভবনে, সেখানে এবারও মোদী সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিলনা। সারাদিন তিন তালাক বিল নিয়ে নানারকম তর্ক-বিতর্কের পর রাজ্যসভা থেকে ওয়াকআউট করে বিরোধীরা। এর ফলে ভোটাভুটিতে রাজ্যসভা থেকেও তিন তালাক বিল পাশ করিয়ে নেয় কেন্দ্র সরকার।
এরপর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে মঞ্জুরি নিয়ে তিন তালাক বিলকে আইনে রুপান্তরিত করতে চলেছে মোদী সরকার। আগামী মাসের মধ্যে তিন তালাক বিল আইন হিসেবে পরিণত হয়ে যাবে দেশে, এবং এরপর থেকে কোন মুসলিম ব্যাক্তি তাঁর স্ত্রীকে তাৎক্ষণিক তিন তালাক দিলে হবে তিন বছরের জেল।
এই বিল রাজ্যসভায় পাশ করার পর উত্তর প্রদেশের বান্দা জেলার এক মুসলিম মহিলা খুশি উদযাপন করছিলেন। আর সেই খুশিই ওনার কাল হয়ে গেলো। ওনার আনন্দ হঠাৎই নিরানন্দে পরিণত হল। কারণ ওনার খুশি পালন দেখে ওনার স্বামী তিন তালাক দিয়ে ওনাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এই ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মুসলিম মহিলা।
বান্দা জেলার বিন্দকি থানার সার্কেল অফিসার অভিষেক তিওয়ারি জানান, এলাকার বাসিন্দা মুফিদা খাতুন রাজ্যসভায় তিন তালাক বিল পাশ হওয়ার পর বাড়িতে খুশি পালন করছিলেন, সেই খুশি বরদাস্ত করেতে পারেনি ওনার স্বামী সামসুদ্দিন। আর তখনই খিপ্ত হয়ে মুফিদাকে তিন তালাক দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয় সামসুদ্দিন। এরপর থানায় গিয়ে মুফিদা তাঁর স্বামী সামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।