বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রবল বর্ষণে কার্যত বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। সোমবার সেখানে ত্রাণ দিতে গিয়ে হামলার মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় সোমবারে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি (Nagrakata Incident) এখন উত্তরবঙ্গ জুড়ে তীব্র আলোচনার কেন্দ্রে। পুলিশ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও বিজেপি নেতাদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
পুলিশের সামনেই হামলা (Nagrakata Incident)
নাগরাকাটার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ও বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেখানেই স্থানীয়দের হাতে তাঁরা আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। পাথরের আঘাতে জখম হন সাংসদ খগেন মুর্মু। আক্রান্ত হন শঙ্কর ঘোষও। হামলার পুরো ঘটনাই ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। বিজেপির তরফে নির্দিষ্টভাবে ৮ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। সেই কারণেই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
শুভেন্দুর বিস্ফোরক পোস্ট
এই ঘটনার (Nagrakata Incident) পরই ফেসবুকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লেখেন, “তৃণমূলের সেই এক ‘সন্ত্রাসবাদ মডেল’।” শুভেন্দু তাঁর পোস্টে চারজনের ছবি ও নামও উল্লেখ করেন। সেই ৪ জন হল সইফুল হক, আইনুল আনসারি, রমজান আলি এবং পিঙ্কি খাতুন। শুভেন্দুর দাবি, “যেভাবে কোচবিহারের খাগড়াবাড়িতে আমার ওপর আক্রমণ হয়েছিল, একইভাবে এখানে পরিকল্পিতভাবে সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষকে ব্যবহার করে এই ঘৃণ্য আক্রমণ ঘটানো হয়েছে।” তিনি আরও লেখেন, “এরা জানে মমতা সরকার গেলে এদের বেআইনি কাজ থেমে যাবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন, ক্ষমতায় থাকতে হলে এদের ছাড় দিতে হবে। তাই রাজ্যে আইনের শাসন কার্যত বিলুপ্ত হয়ে গেছে।”
রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এই ঘটনায় (Nagrakata Incident) তীব্র ভাষায় সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এই রাজ্যে আর কোনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। আইন-শৃঙ্খলার সম্পূর্ণ অবক্ষয় ঘটেছে। সরকার এখন কার্যত লুটেরাদের সরকার হয়ে উঠেছে।”
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দুর দাবির ওপর। তাঁর বক্তব্য, “যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা নাগরাকাটার মানুষ নন। একজন শিলিগুড়ির বিধায়ক, একজন মালদার সাংসদ। এঁরা কী করে জানবেন কে তৃণমূল, কে বিজেপি, কে সিপিএম? নাগরাকাটার মানুষের সঙ্গে এঁদের কোনও যোগাযোগই নেই।”
আরও পড়ুনঃ কার্নিভাল না ক্যানিবাল!” উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর
এই ঘটনার (Nagrakata Incident) পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। বিজেপি দাবি করছে প্রশাসন ইচ্ছে করে অভিযুক্তদের আড়াল করছে। অন্যদিকে তৃণমূল অভিযোগকে রাজনৈতিক নাটক বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। সব মিলিয়ে নাগরাকাটার এই হামলার ঘটনায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গের রাজনীতি।