বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুদিন ধরে বঙ্গে আবাস যোজনার (Awas Yojana) তালিকা নিয়ে প্রকাশ্যে উঠে এসেছে পাহাড়প্রমান দুর্নীতির অভিযোগ। ন্যায্য দাবিদারদের বদলে যোজনার তালিকা ভরেছে শাসকদলের নেতা, কর্মীদের নাম দিয়ে। অন্যদিকে, দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভে সামিল হয়েছে বঞ্চিত মানুষজন। এরই মধ্যে ফের সামনে এল অবাক করা ঘটনা। আবাস যোজনায় তালিকা থেকে বাদ পড়ে গেল গোটা একটা ব্লক। ঘটনা চাউর হতেই দানা বেঁধেছে জোর বিতর্ক।
কী জানা যাচ্ছে? পূর্ব বর্ধমানে (Purba Bardhaman) সদ্য প্রকাশিত আবাস যোজনা তালিকা থেকে বাতিল গলসি-২ (Galsi) ব্লকের সমস্ত উপভোক্তা। অর্থাৎ, বাতিল গোটা একটা ব্লক। কেন এমন ঘটনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এ বিষয়ে গলসি-২ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সঞ্জীব সেন জানান, ২০১৮ সালে যখন আবাস যোজনায় বাড়ির এন্ট্রি হয়েছিল তখন কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টালে ব্লকের ১৯ হাজার ৬৩৬ জন উপভোক্তার নাম তোলা হয়েছিল। এখন সেটা ফাঁকা দেখাচ্ছে। একই দাবি গলসি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসুদেব চৌধুরীও। তিঁনি বলেন, ” ২০১৮ সালে নাম তোলা হয়েছিল। কিন্তু এখন তা ফাঁকা। বাসুদেব চৌধুরী বলেন, আমরা চাই আবাস যোজনার তালিকায় অবিলম্বে নাম পাঠানো হোক এখানকার মানুষের।”
ঘটনা প্রসঙ্গে, এলাকার এক বাসিন্দা জানান, বিডিও অফিসের পাশেই তাঁর বাড়ি। একেবারে মাটির বাড়ির ভগ্নপ্রায় দশা। অথচ তাঁর নাম নেই তালিকায়। একই অভিযোগ তুলেছেন ব্লকের আরেক বাসিন্দা। পাশাপাশি বারবার প্রধানকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিঁনি।
এই বিষয়ে, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “২০১৯ সালে পোর্টালে কাজের সময় টেকনিকাল কারণে গোটা জেলার ৪৪ হাজার মানুষের নাম নেই। তার মধ্যে গলসি ২ নম্বর ব্লকের সব নাম উড়ে গিয়েছে। আমরা বারবার চিঠি করেছি কেন্দ্রীয় সরকারকে। রাজ্যের তরফে আবেদন করা হয়েছে যেহেতু টেকনিক্যাল কারণে নাম বাদ গিয়েছে, যেন নতুন করে নাম নেওয়া হয়। কেন্দ্র অনড় নতুন করে নাম নেবে না। এটা তো টেকনিক্যাল কারণে হয়েছে, আমাদের তো দোষ নয়। কেন্দ্রের একটু নমনীয় হওয়া উচিৎ। একটা জেলার এত মানুষকে বঞ্চিত করা ঠিক হবে না।”
অন্যদিকে, গোটা ঘটনায় প্রশাসনের দিকে অভিযোগ তুলে বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ তাঁ বলেন, “প্রশাসনিক অপদার্থতার জন্যই এই অবস্থা। যোগ্যদের পাশে সরিয়ে রেখে অযোগ্য লোক দিয়ে কাজ করালে যা হয়, এটাও তাই হয়েছে।” পাশাপাশি যুব কংগ্রেসের গৌরব সমাদ্দারের মন্তব্য , “আবাস যোজনা মানেই তাঁকে তৃণমূল হতে হবে। না হলে তালিকায় নাম থাকবে না।”