বাংলাহান্ট ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Dhaka) রাজনীতিতে ফের এক বড়সড় পরিবর্তনের ছবি সামনে এল। শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম বদলে রাখা হল ‘শহিদ শরিফ উসমান হাদি হল’। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল ইউনিয়নের তরফে জানানো হয়েছে, ছাত্র সংগঠনগুলির দীর্ঘদিনের দাবির ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। নাম পরিবর্তনের ঘটনাকে ঘিরে ক্যাম্পাসে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
নাম বদলে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Dhaka)
সূত্রের খবর, শনিবার রাত প্রায় সাড়ে ন’টা নাগাদ ক্রেন ব্যবহার করে হলের মূল গেট থেকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ লেখা নামফলক খুলে ফেলা হয়। তার পরেই সেখানে নতুন বোর্ড বসানো হয়, যেখানে লেখা ছিল ‘Shaheed Sharif Usman Hadi Hall’। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাত সওয়া ১১টার পর মূল ভবনের দেওয়ালে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মুছে ফেলার কাজও শুরু হয়। গোটা প্রক্রিয়াটি চলাকালীন এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: অশান্তির আগুনে ঘি ঢালছে বাংলাদেশ! সীমান্তে মোতায়েন করল ড্রোন, কড়া নজর ভারতীয় সেনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক ইবন আলি মহম্মদ আগেই জানিয়েছিলেন, ছাত্রদের দাবির প্রতিফলন হিসেবেই হলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হল কাউন্সিলের সহ-সভাপতি মুসলিমুর রহমানও সংবাদমাধ্যমে বলেন, “ছাত্রদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নামফলক এবং গ্রাফিতি সরানো হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, হল কাউন্সিল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির মতামত নিয়েই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে।
উল্লেখ্য, শরিফ উসমান হাদি ছিলেন গত বছরের জুলাই আন্দোলনের অন্যতম পরিচিত মুখ। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়ই শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। চলতি বছরের ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগরে নির্বাচনী প্রচারের সময় মুখোশধারী দুষ্কৃতীরা তাঁর মাথায় গুলি চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলেও ছয় দিনের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়। হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশ জুড়ে বিক্ষোভ, ভাঙচুর এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন:ফুটে উঠবে মা ছেলের সম্পর্কের রসায়ন, শুরু হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী মোদীর বায়োপিকের শুটিং
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, একটি হলের নাম পরিবর্তন নিছক প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে ইতিহাস, প্রতীক ও ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে চলমান সংঘাতেরই প্রতিফলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে আরও রাজনৈতিক মেরুকরণ তৈরি করতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।












