“আপনাদের পাশে আছি…”, “অশান্ত” মণিপুরে হিংসা ভুলে শান্তির আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: মণিপুরের হিংসার প্রায় দেড় বছর পর রাজ্যে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। শুক্রবার চূড়াচাঁদপুরে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত ও বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। মণিপুরের (Manipur) মানুষের জেদ, সাহস এবং সংস্কৃতিকে স্যালুট জানিয়ে মোদী বলেন, “আমি মণিপুরের জনগণকে মাথা নত করে প্রণাম জানাই। এই রাজ্যের সংস্কৃতির ভেতরেই বিশাল শক্তি লুকিয়ে আছে।”

মণিপুর সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী (Narendra Modi)

চূড়াচাঁদপুর, ২০২৩ সালের হিংসায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এই অঞ্চল, সেখানেই প্রধানমন্ত্রীর অভ্যর্থনায় আয়োজন করা হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং এই সফরকে শান্তি ও স্থায়ী অগ্রগতির দিকচিহ্ন হিসাবে বর্ণনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi) এদিন মণিপুরবাসীকে প্রায় ৮,৫০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উপহার দেন।

আরও পড়ুন: আরও তীক্ষ্ণ হবে দূরপাল্লার নজরদারি! ভারতীয় নৌসেনার শক্তি বাড়াতে প্রস্তুত 3D এয়ার সার্ভিল্যান্স রাডার

প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi) জানান, ভারতের উন্নয়নের যাত্রাপথে মণিপুরকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাঁর সরকারের অঙ্গীকার। কিছুদিন আগেই এই রাজ্যে প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছিল। এবার নতুন উদ্যোগের ফলে পাহাড়ি অঞ্চল এবং উপজাতি সমাজের জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, আগে বহু গ্রামে পৌঁছনো ছিল কঠিন। এখন শতাধিক গ্রামে সড়ক সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পাহাড়ি মানুষ ও উপজাতি সম্প্রদায় সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন।

মোদী (Narendra Modi) আরও উল্লেখ করেন, তাঁর সরকারের আমলেই মণিপুরে রেল সংযোগের বিস্তার ঘটছে। শিগগিরই জিরিবাম-ইম্ফল রেলপথ চালু হবে, যা রাজধানী ইম্ফলকে জাতীয় রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করবে। তাঁর কথায়, ভারত দ্রুত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে। দেশজুড়ে গৃহহীনদের জন্য পাকা বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনার সুফল মণিপুরের হাজারো পরিবারও পাচ্ছেন।

Narendra Modi calls for peace in unsettled Manipur

আরও পড়ুন: জলে ডুবেই কি মৃত্যু? প্রকাশ্যে অনামিকার মৃত্যুর ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট

পানীয় জলের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। এক দশক আগে পর্যন্ত মণিপুরে মাত্র ২৫-৩০ হাজার বাড়িতে পাইপলাইনের জল পৌঁছাত। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi) জানান, স্বাধীনতার এত বছর পরেও মণিপুরের পাহাড়ি জেলাগুলিতে কোনও মেডিকেল কলেজ ছিল না। আজ চূড়াচাঁদপুরে একটি মেডিকেল কলেজ চালু হয়েছে। পাঁচটি পাহাড়ি জেলায় আধুনিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে কেন্দ্র কাজ করছে।

মোদী (Narendra Modi) বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে মণিপুরে ইতিমধ্যেই আড়াই লক্ষাধিক রোগী বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়েছেন। শান্তি প্রক্রিয়া নিয়েও তিনি আশাবাদী। সম্প্রতি পাহাড় ও উপত্যকার বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে কেন্দ্র সরকারের আলোচনা হয়েছে। সম্মান ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলে আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সকল সংগঠনকে শান্তির পথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং বলেন, “আপনাদের স্বপ্নপূরণে আমি পাশে আছি। ভারত সরকার মণিপুরের জনগণের সঙ্গে রয়েছে।”