বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাম ও সীতার বিবাহের পবিত্র তিথি, পবিত্র বিবাহ পঞ্চমীর এক শুভক্ষণে আজ অযোধ্যা রাম (Ayodhya Ram Temple) জন্মভূমি মন্দিরের ১৯১ ফুট উঁচু শিখরে উড়ল বহু প্রতীক্ষিত গৈরিক ধ্বজা। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতকে সঙ্গে নিয়ে ধ্বজা উত্তোলন অনুষ্ঠিত হয়। সরাসরি এবং গণমাধ্যমের পর্দায় এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকলেন দেশজুড়ে ও বিদেশ থেকে আসা লক্ষ লক্ষ ভক্ত এবং সাধারণ মানুষ। ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি গর্ভগৃহে রাম লালার অভিষেকানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মন্দিরের বেশ কিছু কাজ বাকি ছিল। এই ধ্বজা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই সেই অভিষেকানুষ্ঠানের পরবর্তী কাজগুলিও আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হল, যা অযোধ্যার ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করল।
অযোধ্যার রাম মন্দিরে (Ayodhya Ram Temple) প্রধানমন্ত্রীর ধ্বজা উত্তোলন:
রাম মন্দিরের (Ayodhya Ram Temple) এই বর্ণাঢ্য ও সুসংগঠিত আচার অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কাশীর পণ্ডিত গণেশ্বর শাস্ত্রী। তাঁর নির্দেশনায় অযোধ্যা, কাশী এবং দক্ষিণ ভারতের মোট ১০৮ জন আচার্য অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে এই পবিত্র আচারের প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করেন। উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমন্ত্রিত প্রায় ৬,০০০ থেকে ৭,০০০ অতিথি এই বিশেষ মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও শঙ্খ-ঘণ্টাধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল মন্দির চত্বর, যা রামলালার প্রতি ভক্তদের অপার শ্রদ্ধা ও ভক্তিকে প্রতিফলিত করেছে।
আরও পড়ুন:৩০ দিনের মধ্যেই ৩ টি বিশ্বকাপ! এবার মহিলা কাবাডি ওয়ার্ল্ড কাপ জিতল ভারতের মেয়েরা
মন্দিরের (Ayodhya Ram Temple) চূড়ায় উড্ডীন হওয়া এই গৈরিক পতাকাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিশেষ তাৎপর্য। ১৬১ ফুটের মূল মন্দিরের উপরে বিশেষভাবে লাগানো হয়েছে একটি ৪২ ফুটের ধ্বজ দণ্ড, যা পতাকাটিকে সর্বমোট ১৯১ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করেছে। সূত্রের দাবি, পতাকাটি ২২ ফুট লম্বা এবং ১১ ফুট চওড়া। এই পতাকায় সুদৃশ্যভাবে খোদিত রয়েছে কাঞ্চন ফুল গাছ, পবিত্র ওঙ্কার চিহ্ন এবং সূর্যের ছবি, যা দিব্য শক্তি ও শুভত্বের প্রতীক। গোটা মন্দির চত্বরকে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে, যার অধিকাংশই এসেছে সুদূর কলকাতা থেকে, যা এই জাতীয় অনুষ্ঠানে বাংলার সাংস্কৃতিক যোগসূত্রকে আরও একবার প্রতিষ্ঠা করল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বিশেষ দিনে অযোধ্যায় (Ayodhya Ram Temple) তাঁর সফর শুরু করেন একটি বর্ণাঢ্য রোড শোয়ের মাধ্যমে। এরপর তিনি সপ্তমন্দির এবং শেষাবতার মন্দিরে প্রার্থনা করেন। উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের ঠিক আগে, পঞ্চপ্রদীপে রামলালার আরতি করে তিনিই প্রথম অযোধ্যার এই নবরূপে স্থাপিত রামমন্দিরের উদ্বোধন করেছিলেন। তবে, আজকের এই ঐতিহাসিক ধ্বজা উত্তোলনের পরেও আরও একটি অনুষ্ঠান নির্ধারিত আছে। ঘোষণা করা হয়েছে, ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে মঙ্গলবারে তিনি পুনরায় এই রাম মন্দিরে একটি বিশেষ ধ্বজা উত্তোলন করবেন।

আরও পড়ুন : SSC নবম-দশমের ফলপ্রকাশ হতেই চাকরিহারাদের জন্য বড় বার্তা শিক্ষামন্ত্রীর, ব্রাত্য বসু লিখলেন, সবকিছুই…
মঙ্গলবারের এই বিশেষ অনুষ্ঠান উপলক্ষে অযোধ্যায় (Ayodhya Ram Temple) পর্যটকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে গোটা শহরকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ঢেলে সাজিয়েছে প্রশাসন। যান নিয়ন্ত্রণ, মোড়ে মোড়ে ব্যারিকেট এবং আকাশ পথে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছুদিন আগে দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের মতো ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশাসন এবার আরও বেশি সতর্ক। এই ধ্বজা উত্তোলনের পর কাল সরযূ নদীর তীরে এক বিশেষ আরতির আয়োজন করা হয়েছে, যা এই পুণ্য তিথির সমাপ্তি ঘোষণা করবে।












