বাংলাহান্ট ডেস্ক:- এবার ট্রাম্পের দাদাগিরির কড়া জবাব দিতে একই মঞ্চে আসছে মোদি-পুতিন-জিনপিং (Narendra Modi)। আগামী মাসেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এসসিও (SCO) সম্মেলন। চিনে (China) অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে জিনপিং সরকার স্বাগত জানাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। ভারত-রাশিয়া সহ আরও কুড়ি দেশের প্রধান এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।
একই মঞ্চে মোদির সঙ্গে পুতিন-জিনপিং (Narendra Modi)
আগামী সপ্তাহে শুরু হতে চলেছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন। ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই বৈঠক বসবে চিনে। আয়োজক দেশ হিসেবে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্বাগত জানাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। দুই দিনের এই মঞ্চে কুড়ির বেশি বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকবেন বলে নিশ্চিত হয়েছে। কূটনৈতিক দিক থেকে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গ্লোবাল সাউথের উত্থান এবং পশ্চিমী শক্তির বিরুদ্ধে বিকল্প নেতৃত্বের ছবি স্পষ্ট হয়ে উঠতে চলেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অস্বস্তি বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন: যোগীরাজ্যে চাকরির ছড়াছড়ি! “রোজগার মহাকুম্ভ ২০২৫”-এ বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ
উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর এই প্রথমবার চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাই এই সফর শুধু বহুপাক্ষিক সম্মেলনের সীমায় আটকে থাকছে না, বরং ভারত-চিন সম্পর্কের টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটও নতুন মাত্রা পাচ্ছে। এর আগে রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে মোদি ও পুতিনকে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমী দুনিয়ার অধিকাংশ দেশ পুতিনের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখলেও ভারত সেই পথ নেয়নি। বরং নয়াদিল্লি মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। গত সপ্তাহেই ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, খুব শিগগিরি ভারত, চিন ও রাশিয়ার মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক আয়োজিত হবে। এই বার্তাই প্রমাণ করে, ভবিষ্যতের ভূরাজনীতিতে এশিয়ার ভূমিকাই হয়ে উঠতে চলেছে মূল কেন্দ্রবিন্দু।
আরও পড়ুন: ঘোর বিপদের সম্মুখীন পাকিস্তান! ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলায় প্রাণ হারালেন ৫ পাক সেনা, আহত ১৭ জন
চিনের এক গবেষণা সংস্থার সম্পাদক এরিক ওলান্ডার বলেছেন, শি জিনপিং এই সম্মেলনকে ব্যবহার করতে চান মার্কিন আধিপত্যের বাইরে একটি নতুন আন্তর্জাতিক পরিসরের ছবি তুলে ধরতে। তাঁর মতে, গত জানুয়ারি থেকে হোয়াইট হাউস একের পর এক আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছে—চিন, ইরান, রাশিয়ার পর এবার ভারতের বিরুদ্ধেও চাপ সৃষ্টি করা শুরু হয়েছে। তবুও এর কোনও কার্যকর প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে, বেজিং একাধিকবার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে মার্কিন আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে ভারত ও চিনকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগোতে হবে। এমনকি রূপক অর্থে ‘হাতি ও ড্রাগনের নাচ’ দেখানোর বার্তাও দিয়েছে তারা।
অর্থাৎ সব মিলিয়ে, মোদির এই সফর শুধুই এসসিও সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক পরিসরে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এর আড়ালে রয়েছে বৃহত্তর কূটনৈতিক অঙ্ক, যেখানে রাশিয়া, চিন ও ভারতের সম্পর্ক ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক শক্তির ভারসাম্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।