বাংলাহান্ট ডেস্ক:- শুল্কনীতি নিয়ে হুঙ্কার নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi)। আমেরিকার অর্থনৈতিক চাপের মুখে মাথা নত করবে না ভারত (India), সোমবার আহমেদাবাদের (Ahemdabad) জনসভা থেকে এমন দৃঢ় বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) শুল্ক আরোপের হুমকির প্রেক্ষিতেই জনসভা থেকে মোদি স্পষ্ট জানালেন, ভারত তার আত্মনির্ভরতার পথে অটল থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হুঙ্কার (Narendra Modi)
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “যতই চাপ আসুক না কেন, আমরা তার বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করব। আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প নিয়েই আমরা এগিয়েছি এবং বহু দূর অগ্রসর হয়েছি। আজ গোটা বিশ্ব অর্থনৈতিক স্বার্থপরতার ভিত্তিতে নীতি তৈরি করছে, কিন্তু ভারত কখনও নাগরিকদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেবে না।” তিনি আরও যোগ বলেন, “শুল্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের চাপ সহ্য করব না। মাথা নত করব না। আমাদের সরকার পথ খুঁজে নেবে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, পশুপালক এবং কৃষকদের কোনও ক্ষতি আমরা হতে দেব না।”
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে আরও শুল্ক বৃদ্ধির হুঁশিয়ারি দিয়েছে। প্রথম দফায় ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর রাশিয়া (Russia) থেকে তেল আমদানি করায় ভারতের উপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুমকি এসেছে। মার্কিন দাবি, ভারতের তেল কেনার কারণেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অর্থ পাচ্ছে। তবে নয়াদিল্লি এই যুক্তি সরাসরি খারিজ করেছে। ভারতের পাল্টা বক্তব্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চিনের মতো বহু দেশ এমনকি আমেরিকাও রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করছে। তাহলে কেবল ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি কেন করা হচ্ছে? এই চাপ সৃষ্টি একেবারে অন্যায্য।
আরও পড়ুন: পাকিস্তান থেকে ভারতে ঢোকার চেষ্টা? কড়া জবাব ভারতীয় সেনার, LOC-তে বাড়ল নজরদারি
সরকারের অবস্থান স্পষ্ট—রাষ্ট্রের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যেখান থেকে কম দামে তেল পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই তেল কিনবে ভারত। এই অবস্থায় আগামী বুধবার থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতি কার্যকর হওয়ার কথা। তার আগে ২৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। সূত্রের খবর, বিদ্যমান ২৫ শতাংশ শুল্কের প্রভাবে ভারতের রপ্তানিমুখী সংস্থাগুলির লভ্যাংশ মার্জিন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার এবং সংস্থাগুলি ভবিষ্যতে কীভাবে কৌশল নেবে, সেই বিষয়েই মঙ্গলবারের বৈঠকে বিস্তৃত আলোচনা হবে বলে অনুমান।
এদিনের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে,ভারত অর্থনৈতিক চাপ সহ্য করলেও জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আপস কখনই করবে না। শুল্ক চাপিয়ে নয়াদিল্লিকে কোণঠাসা করার মার্কিন প্রচেষ্টা কার্যত আরও বড় কূটনৈতিক সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।