বাংলাহান্ট ডেস্ক:- ফের একবার সন্ত্রাসবাদে জিরো টলারেন্সের হুংকার নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi)। চিনে (China) সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ফের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার চিনের তিয়ানজিন শহরে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারত (India), পাকিস্তান (Pakistan)-সহ মোট ২০টি দেশের প্রতিনিধি। সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের (Shahbaz Sharif) সামনেই মোদী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন। সরাসরি আল কায়েদার মতো জঙ্গি সংগঠনের নাম টেনে তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ মানবতার বিরুদ্ধে চরম চ্যালেঞ্জ। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও দ্বিচারিতা বরদাস্ত করা যায় না।’’
ফের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব মোদী (Narendra Modi)
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, গত চার দশক ধরে ভারত এই সন্ত্রাসবাদের শিকার। বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, অনেকে অনাথ হয়েছেন। পহেলগাঁওয়ের ভয়াবহ হামলার প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, ‘‘ওই ঘটনা শুধু ভারতের আত্মায় আঘাত করেনি, বরং মানবতায় বিশ্বাসী প্রতিটি দেশের প্রতি স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। আমাদের সন্তানদের আমরা হারিয়েছি। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কোনও দেশ যেন দ্বিচারিতা না করে।’’ তাঁর মতে, ‘‘যদি কোনও দেশ প্রকাশ্যে সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয়, তা কি মেনে নেওয়া সম্ভব? আমাদের সবার কাছে এটাই বড় প্রশ্ন।’’
আরও পড়ুন:- পাত্তাই দিলেন না মোদী-পুতিন! দূরেই দাঁড়িয়ে রইলেন শরিফ, SCO সম্মেলনে একী অবস্থা পাকিস্তানের?
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সময় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও। পহেলগাঁও হামলার জন্য শুরু থেকেই ইসলামাবাদকে দায়ী করে এসেছে দিল্লি। ২২ এপ্রিলের ওই ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন। ঘটনার দায়ে পাকিস্তানকে একাধিক আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, মে মাসের শুরুতেই ভারতীয় সেনা পাকিস্তানে জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে বড়সড় অভিযান চালায়। ধ্বংস করা হয় একাধিক ঘাঁটি, সংঘর্ষ চলে চার দিন ধরে। সেই পরিস্থিতিতে শাহবাজ় শরিফের সামনেই মোদীর বার্তা কূটনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে মোদী (Narendra Modi) স্পষ্ট করে দেন, নিরাপত্তা প্রতিটি দেশের অধিকার। তাই এসসিও সদস্যদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আমাদের গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জ়িরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে। কোনও অবস্থাতেই এই বিষয়ে আপস করা চলবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জঙ্গিবাদ এবং চরমপন্থা মানবতার জন্য যৌথ হুমকি। যত দিন এই বিপদ থাকবে, কোনও দেশ বা সমাজ সুরক্ষিত থাকতে পারবে না।’’
আরও পড়ুন:- ‘দাগি’ তালিকা প্রকাশ হতেই চাপে রাজ্য, কী বললেন শিক্ষামন্ত্রী?
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ভারতের অবস্থানও ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, ভারত দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আল কায়েদা এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে ভারত কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। কেবল অস্ত্র দিয়েই নয়, আর্থিক সাহায্যের মাধ্যমে জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধ করাও ভারতের অঙ্গীকার। তাঁর কথায়, ‘‘অর্থ দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন আমরা কোনওভাবেই মেনে নিই না।’’
এই সম্মেলনের আগে মোদী (Narendra Modi) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন। সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বার্তার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সোমবার এসসিও বৈঠক শেষ করে মোদীর ফেরার কথা রয়েছে। তাঁর এই ভাষণ আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের অবস্থানকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।