বাংলাহান্ট ডেস্ক: মনের কথা স্পষ্ট ভাবে বলতে পছন্দ করেন অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ (Naseeruddin Shah)। তাঁর অনেক মতামতই মেলে না অন্য কারোর সঙ্গে। ফলে প্রায়ই বিতর্ক ডেকে আনেন প্রবীণ অভিনেতা। বিগত কয়েক দিন ধরে মোগলদের সম্পর্কে বিষ্ফোরক সব মন্তব্য করে চলেছেন নাসিরুদ্দিন। আর সেইসব কমেন্টের জেরে টানা সংবাদ শিরোনামে রয়েছেন অভিনেতা।
আগামীতে ‘তাজ: ডিভাইডেড বাই ব্লাড’ সিরিজে দেখা যাবে নাসিরুদ্দিনকে। অভিনেতা বলেন, এই প্রোজেক্টটা করতে গিয়ে মোগল সম্রাট আকবর সম্পর্কে অনেক ভ্রান্ত ধারণা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁর। বেশ কিছু বই পড়েছেন তিনি এবং আকবর সম্পর্কে বেশ কিছু ভুল ধারণা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন নাসিরুদ্দিন।
অভিনেতা বলেন, কিছু বইতে দাবি করা হয়েছে যে আকবর নাকি নতুন এক ধর্ম প্রবর্তন করার কথা ভেবেছিলেন। ‘দিন-এ-ইলাহি’ নামে নিজস্ব একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন মোগল সম্রাট, এমনটাই বলা হয়েছে একাধিক পুঁথিতে। কিন্তু নাসিরুদ্দিনের দাবি, এ তথ্য ভুল।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নাসিরুদ্দিন বলেন, ১৯৫০ এবং ৬০ এর দশকে যে ইতিহাস পড়ানো হয়েছিল তাতে আইরিশ এবং ইংরেজ শিক্ষকদের প্রভাব ছিল। এই সময়েই পড়ানো হয়েছিল যে আকবর এক নতুন ধর্ম প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন যার নাম দিন-এ-ইলাহি। কিন্তু এ তথ্য ভুল বলে দাবি করেন নাসিরুদ্দিন।
তিনি বলেন, প্রসিদ্ধ ইতিহাসবিদদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি এ বিষয়ে এবং এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে এই সমস্ত তথ্য ভুল। নাসিরুদ্দিন বলেন, আকবর কখনো ‘দিন-এ-ইলাহি’ বলতেন না। তিনি বলতেন ‘ওয়াহাদাত-এ-ইলাহি’ যার অর্থ এক সৃষ্টিকর্তা। যে ঈশ্বরেরই আরাধনা করা হোক না কেন, যেভাবেই করা হোক না কেন, সৃষ্টিকর্তারই আরাধনা করা হচ্ছে। এটাই তাঁর বিশ্বাস ছিল।
এমন ভুল তথ্য ছড়ালো কীভাবে? সেটাও খুঁজে বের করেছেন নাসিরুদ্দিন। তাঁর কথায়, এটা ঘটেছে প্রাচীন ইতিহাসবিদ আবুল ফজলের জন্য। তিনি আকবরকে সহ্য করতে পারতেন না। নাসিরুদ্দিন জানান, ‘তাজ’ প্রোজেক্টে কাজ করার সময়ে এই তথ্য আবিষ্কার করেন তিনি এবং নির্মাতাদের আপত্তি নিয়ে জানান। সিরিজ নির্মাতারা তাঁর কথায় গুরুত্ব দিয়েছে বলেও জানান নাসিরুদ্দিন।