বাংলাহান্ট ডেস্কঃ জাতীয় স্তরের তিরন্দাজ (Archer) হয়েও অর্থাভাবে রাস্তার পাশে সবজি বিক্রির পথ বেছে নেয় সোনু খাতুন (Sonu Khatun)। বছর ২৩-এর সোনু খাতুন ঝাড়িয়ার জেলগোড়া থানা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর এই সবজি বিক্রির ছবি ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন তাঁকে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে আর্থিক দিক থেকে সাহায্য করেছেন।
সোনু জানায় প্রশিক্ষণ করতে গিয়ে তাঁর ধনুকটি ভেঙ্গে যায়। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার দরুণ, সে নতুন ধনুক কিনতে অসমর্থ হয়। পরবর্তীতে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সে নিজেই সবজি বিক্রি করতে শুরু করে।
সাহায্য আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
তিরন্দাজ সোনুর এই সবজি বিক্রির ভিডিও প্রকাশ হতেই মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন তাঁকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। তিনি ট্যুইটারে লেখেন, তিরন্দাজ সোনু খাতুন পরিস্থিতির শিকার হয়ে রাস্তার ধারে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আমাদের সরকার এই ধরণের খেলোয়াড়দের চিহ্নিত করছে, যাতে করে তাঁদের সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা দিতে পারে। এরপর সোনুকে সাহায্য করবার জন্য তিনি ধনবাদ জেলা প্রশাসক অমিত কুমারকে নির্দেশ দেন।
দেওয়া হল ২০ হাজার টাকার চেক
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেওয়ার একদিন আগেই ২ রা জুন ধনবাদ জেলা প্রশাসক অমিত কুমার সোনুর হাতে ২০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। এবং তিনি বলে, ভবিষ্যতেও সোনুকে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সাহায্য করা হবে। ধনুকটি ভেঙ্গে যাওয়ার জন্য সোনু প্রশিক্ষণ করতে পারছে না, জানতে পেরে তাঁর হাতে এই অর্থ তুলে দেয় জেলা প্রশাসন। সরকারের দেওয়া এই অর্থ হাতে নিয়ে সোনু জানিয়েছে, সে এই অর্থ দিয়ে ধনুক কিনে আরও ভালো করে প্রশিক্ষণ শুরু করবে।
পরিবারের আর্থিক অনটন
মা শাকিলা খাতুন এবং বাবা ইরদীশ মিনিয়া এবং ছোট দুই বোন রয়েছে সোনুর বাড়িতে। তাঁর পিতা একজন শ্রমিক, মা বিভিন্ন বাড়িতে ঘরের কাজ করে এবং দুই বোন এখনও পড়াশুনা করছে। কিন্তু দুই বছর আগে প্রশিক্ষণ করতে গিয়ে তাঁর ধনুকটি ভেঙ্গে যায়। এই লকডাউনের সময়ে বাবা- মায়ের কাজ বন্ধ থাকায় সংসারের হাল ধরতে সবজি বিক্রির পথ বেছে নেয় সে।
সোনুর কৃতিত্ব
২০১১ সালে পুনেতে অনুষ্ঠিত ৫৬ তম জাতীয় স্কুল তীরন্দাজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছিলেন সোনু। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্য পর্যায়ের খেলায় অংশগ্রহণ করে প্রচুর সংখ্যক পদক জয়লাভ করেছে সোনু। এমনকি টাটা আর্চারি একাডেমির অংশ সোনু।