বাংলা হান্ট ডেস্ক: ছোট থেকেই বাগান তৈরির শখ রয়েছে তাঁর। এমনকি, সরকারি কোয়ার্টারেও তিনি তৈরি করেছেন বাহারি এবং দুষ্প্রাপ্য সব ফুলের বাগান। আর যে কারণে ধানবাদে কোল ইন্ডিয়ার সরকারি কোয়ার্টারে বসবাসকারী নেহা কাশ্যপের বাড়িতে এখন প্রায়ই মানুষের ভিড় লেগে থাকে। শুধু তাই নয়, লকডাউনের সময়, বহু মানুষ তাঁর তৈরি বাগানে সময় কাটাতেও আসতেন।
এদিকে, নেহা যে এলাকায় থাকেন সেটি কয়লা খনির এলাকা। তাই সেখানে অত্যন্ত গরমের পাশাপাশি রয়েছে ধুলোবালিও। এমতাবস্থায়, বাহারি গাছে ভরা নেহার বাগান সবাইকে কাশ্মীরের সুন্দর উপত্যকার কথা মনে করিয়ে দেয়।
যদিও আজ থেকে প্রায় বছর সাতেক আগে তাঁর এই বাড়িটি মোটেও এমন ছিল না। কারণ, তখন এখানে খুব বেশি গাছ লাগানো হয়নি। এমনকি, নেহার পাশের কোনো বাড়িতেও কেউ সেভাবে বাগান করতেন না। এদিকে, তিনি যখন বাগান করা শুরু করেছিলেন, তখন অনেকেই তাঁকে বলেছেন যে, “সরকারি কোয়ার্টার এভাবে সাজিয়ে কি লাভ? কয়েক বছর পর, যখন ছেড়ে দিতে হবে তখন কী করবেন?” কিন্তু, নেহা সবাইকে বলতেন, “পরে কি হবে ভেবে দেখব। বাড়িতে এত জায়গা থাকলে গাছপালা লাগাতেই হবে।”
জানা গিয়েছে যে, নেহা মূলত রাঁচির বাসিন্দা। তাঁর মা রাঁচির একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন এবং বাড়িতেও অনেক গাছপালা লাগিয়েছেন তিনি। তাই, নেহার শৈশবও কেটেছে সবুজের মধ্যেই। এই প্রসঙ্গে নেহা জানিয়েছেন, “রাঁচি খুব বেশি গরম হয় না। তাই শহরের পরিবেশ খুব ভালো থাকে। অন্যদিকে গাছপালাও দ্রুত মরে না। কিন্তু ধানবাদে এত গরম যে গাছপালার জন্য বিশেষ যত্ন নিতে হয় এবং আমি বাগান করার জন্য এতই আগ্রহী ছিলাম যে এখানে গাছপালা ছাড়া আমার আর কিছুই ভালো লাগেনি।”
নেহা প্রথমে তাঁর মায়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে কিছু সবজি লাগানো শুরু করেন। তিনি লক্ষ্য করেন, খনির এলাকা হওয়ায় এখানকার মাটিতে অনেক ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে, তাই এটি যথেষ্ট উর্বরও। এরপর তিনি বিভিন্ন ফুল এবং ফলের গাছের চারাও রোপণ করেন। যেহেতু ধানবাদে ভালো কোনো নার্সারি নেই, তাই তিনি রাঁচি থেকে বেশিরভাগ গাছপালা নিয়ে আসেন। আজ তাঁর বাড়িতে সব মরশুমের শাকসবজি এবং ফুল পাওয়া যায়। নেহা গোলাপ খুব পছন্দ করেন। আপাতত তাঁর এই বাগানে মোট ১৫ রকমের গোলাপ রয়েছে।
নেহা বেশিরভাগ গাছপালা হাঁড়িতে লাগিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, “যদি আমি আমার নতুন বাড়িতে এই পাত্রগুলি রাখার জায়গা না পাই, আমি সেগুলি এখানে রেখে দেব। যাতে যাঁরা এখানে থাকতে আসবেন তাঁরা এই গাছগুলি দেখে বাগান করতে আগ্রহী হন।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এখন তাঁদের দেখে আশেপাশের অনেকেই বাড়িতে চারাগাছ লাগাতে শুরু করেছেন এবং নেহার কাছ থেকে বাগান সংক্রান্ত পরামর্শও নিতে আসেন তাঁরা। বাগান করার পাশাপাশি, নেহা কেক তৈরিতেও পারদর্শী এবং বাড়িতে থেকেই বেকিং ব্যবসা চালান তিনি।