বাংলা হান্ট ডেস্ক : আজ নীলবাড়ির লড়াইয়ের বয়স প্রায় আড়াই বছর। সেই লড়াইয়ের পর একাধিক মানুষের জীবন বদলে গেছিল। যার মধ্যে একটা নাম দেবাশিস ধর। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দেবাশিস ধরকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দেওয়া হয় তার পদ থেকে। সেই সাথে ধাক্কা খায় তার ব্যক্তিগত জীবনও। লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election 2024) বীরভূমের বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধরের (Debasish Dhar) জীবন থেকে হারিয়ে যায় তার ‘আদর’ও।
গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় শীতলকুচিতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে কমবেশি সকলেই অবগত। ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় মাথাভাঙা ব্লকের জোড়পাটকির আমতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়না। তখন একপ্রকার বাধ্য হয়েই গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। গোলাগুলিতে প্রাণ হারায় চারজন। তারপর থেকেই এক নতুন দিশায় ঘুরে যায় কোচবিহারের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার দেবাশিস ধরের জীবন।
এই ঘটনার জল গড়িয়েছিল বহুদূর। বঙ্গ রাজনীতিতেও অনেককিছু বদলে দিয়েছিল শীতলকুচির এই ঘটনা। একই সাথে দেবাশিস ধরের চাকরি নিয়েও টানাটানি পড়ে যায়। তার জীবন দূরে সরতে থাকে নিজের মেয়ে এবং তার নিজের মা। বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানিয়েছেন, শীতলকুচি ঘটনার পর প্রায় আড়াই বছর তার মেয়ের সাথে দেখা হয়নি। মুখদর্শন করেননি তার গর্ভধারিনী মা।
আরও পড়ুন : চাঁদিফাটা গরমে কাহিল হবে দক্ষিণবঙ্গ, কবে বৃষ্টি? আবহাওয়ার মেগা আপডেট
এইদিন এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তার মেয়ের বয়স এখন পনের। আদালতের নির্দেশে সে তার মায়ের কাছেই থাকে। সপ্তাহে একদিন দেখা করার সুযোগ পেতেন তিনি। তবে শীতলকুচির ঘটনার পর যখন দেবাশিষ ধরের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্ত শুরু হয় তখন তার মেয়ে নিজেই বাবাকে দেখা করতে আসতে বারণ করে দেয়। তার বাড়িতে তল্লাশি শুরু হতেই মুখ ফিরিয়ে নেন গর্ভধারিনী মা-ও। দেবাশীষের কথায়, ‘বাড়িতে তল্লাশিটা মেনে নিতে পারেননি মা। আমার মুখদর্শন করবেন না বলে জানিয়ে দেন। বলেন, আমায় শান্তিতে মরতে দে!’
আরও পড়ুন : পুলিশের অসহযোগিতার কারণেই আটকে বেলেঘাটা মেট্রোর কাজ! ক্ষোভ উগরে দিল CRS
উল্লেখ্য, বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দেবাশিসের নাম চূড়ান্ত হওয়ার দিন কয়েক আগেই ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। এখন তার লক্ষ্য, মানুষের হয়ে কাজ করা। সেই সাথে ফিরে পেতে চান মা ও মেয়ের সান্নিধ্য। তিনি বলেছেন, ‘আমি যদি সাংসদ হতে পারি, যদি কোনও বড় পদ পাই, তা হলে হয়তো আবার সব কিছু আগের মতো হতে পারে। আমি নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে মেয়ে হয়তো আমার সামনে আসতে রাজি হবে। ‘বাবা’ বলে ডাকবে। আমিও মায়ের কাছে গিয়ে বসতে পারব সেই আগের মতো।’