বাংলাহান্ট ডেস্ক:- নেপালে (Nepal) চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গণঅভ্যুত্থানের আবহে ফের দুঃসংবাদ। দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানালের স্ত্রী রাজ্যলক্ষ্মী চিত্রকরের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার কাঠমান্ডুর ডাল্লু এলাকায় ঝালানাথের বাড়িতে উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সময় বাড়ির ভিতরে ছিলেন রাজ্যলক্ষ্মী। সূত্রের দাবি, তাঁকে ইচ্ছে করে ভিতরে আটকে রেখে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কীর্তিপুর বার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ঝালানাথের পরিবার এই মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করেছে।
নেপালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীর মৃত্যু (Nepal)
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খানাল নেপালের (Nepal) কমিউনিস্ট পার্টি (CPN)-এর নেতা। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ওই বছরের অগস্ট পর্যন্ত তিনি নেপালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। মঙ্গলবারের ঘটনার পরে সামাজিক মাধ্যমে রাজ্যলক্ষ্মীর ঝলসানো দেহের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যদিও তার সত্যতা এখনও নিশ্চিত হয়নি।
নেপালে (Nepal) পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। টানা বিক্ষোভ, পুলিশি গুলি এবং সহিংসতার জেরে ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবনেও আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল জনতা। সেনাপ্রধানও তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেন। মনে করা হচ্ছে, তিনি দেশ ছেড়ে বিদেশে আশ্রয় নিতে পারেন, যদিও এখনও সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। ওলির পদত্যাগপত্র গ্রহণের পর রাষ্ট্রপতিও ইস্তফা দিয়েছেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে মঙ্গলবার একাধিক মন্ত্রী ও প্রাক্তন নেতার বাড়ি আক্রান্ত হয়েছে। উপপ্রধানমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা এবং তাঁর স্ত্রী তথা নেপালের বিদেশমন্ত্রী আরজু রানা দেউবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওয়। তাঁদেরও বিক্ষোভকারীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের বাসভবন, সিপিএন নেতা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডর বাড়ি, সদ্য ইস্তফা দেওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুংয়ের বাসভবনেও আগুন ধরানো হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে নেপালি (Nepal) কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট শের বাহাদুর দেউবার বাড়ি ও দলের সদর দফতরেও। ইউএমএল নেতা মহেশ বাসনেত এবং নেপালি কংগ্রেস নেতা গগন থাপার বাড়িও রেহাই পায়নি।
এখানেই থেমে থাকেনি ক্ষোভ। বিক্ষুব্ধ জনতা নেপালের (Nepal) পার্লামেন্ট ভবন ও সুপ্রিম কোর্টেও তাণ্ডব চালিয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুব আন্দোলন এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে পুরনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি জনতার ক্ষোভ হিংস্র আকার নিচ্ছে। পরিস্থিতি কোনদিকে গড়াবে, তা নিয়ে এখন চরম অনিশ্চয়তা নেপালে।