বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিল্লির লালকেল্লা চত্বরে ভয়াবহ বিস্ফোরণকাণ্ডে (Delhi Red Fort Blast) অবশেষে বড় সাফল্য পেল তদন্তকারীরা। ঘটনার প্রায় চার দিন পর ডিএনএ পরীক্ষায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে—সোমবারের আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল ডঃ উমর নবি। ফরিদাবাদের আল ফালাহ মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত এই চিকিৎসকই ছিলেন ওই সাদা রঙের আই-২০ গাড়ির চালক, যেটি লালকেল্লার পার্কিং লটে বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের আগে তিন ঘণ্টা গাড়ির ভিতরে বসেছিল উমর। তারপর রিং সার্কেলের কাছে সিগনালে দাঁড়ানো অবস্থাতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে, তাতে মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় গাড়িটি।
দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে (Delhi Red Fort Blast) চাঞ্চল্যকর মোড়:
তদন্তকারীরা শুরু থেকেই সন্দেহ করেছিলেন, আই-২০ গাড়ির ভিতর আত্মঘাতী বিস্ফোরণ (Delhi Red Fort Blast) ঘটিয়েছিল একজন প্রশিক্ষিত ব্যক্তি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, ঘটনার দিন অর্থাৎ ১০ নভেম্বর সকালে রামলীলা ময়দানের দিক থেকে একটি সাদা আই-২০ এসে থামে লালকেল্লার সুনহেরি মসজিদের পার্কিং লটে। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে গাড়ির ভিতরে বসেছিল এক যুবক। ফুটেজে স্পষ্টভাবে দেখা না গেলেও গঠন এবং পোশাক দেখে অনুমান করা হয় যে তিনিই উমর নবি।
আরও পড়ুন:SIR আতঙ্কে জন্ম শংসাপত্রের চাপে পুরসভা, পরিস্থিতি সামলাতে কড়া নির্দেশ মেয়রের
পরবর্তীতে গাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার হওয়া দেহাংশ ও উমরের মায়ের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হয়। ফরেনসিক রিপোর্টে দেখা যায়, স্টিয়ারিং ও অ্যাক্সিলেটরের মাঝে আটকে থাকা একটি পা-সহ গাড়ির ভিতর পাওয়া দেহাংশের ডিএনএ পুরোপুরি মিলে গিয়েছে উমরের মায়ের নমুনার সঙ্গে। ফলে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন এবং বিস্ফোরণে (Delhi Red Fort Blast) নিহত হয়েছেন ডঃ উমর নবি।
সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের (Delhi Red Fort Blast) ঠিক আগে উমরকে রামলীলা ময়দানের কাছে আসাফ আলি রোডের এক মসজিদে দেখা গিয়েছিল। মসজিদ থেকে বেরিয়েই তিনি সোজা পার্কিং লটে যান এবং তিন ঘণ্টা গাড়ির ভিতরে অপেক্ষা করেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, সেই সময় তাঁর মোবাইল ফোনে কোনও বহিরাগত কল আসেনি, বরং কয়েকটি নির্দিষ্ট এনক্রিপটেড অ্যাপে কার্যকলাপের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এনআইএ এখন তাঁর ফোনের ডেটা ও লোকেশন হিস্ট্রি খতিয়ে দেখছে, যাতে বোঝা যায় বিস্ফোরণের আগে কার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল উমরের।

আরও পড়ুন:দিল্লির ঘটনা থেকেই শিক্ষা, নিরাপত্তার চাদরে ঢাকল ইডেন, শুক্রবার থেকে ৫ দিন বন্ধ একাধিক রাস্তা
উমর নবি পুলওয়ামার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন। ফরিদাবাদের আল ফালাহ মেডিক্যাল কলেজে তিনি ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে কাজ করতেন। সহকর্মীরা জানিয়েছেন, তিনি খুবই সংযত ও চুপচাপ মানুষ ছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁকে কিছুটা মানসিকভাবে বিচলিত দেখা গিয়েছিল। তাঁর পরিবার এই ঘটনায় স্তম্ভিত। উমরের বউদি জানিয়েছেন, “ও খুব শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। নিজের পড়াশোনা আর কাজ নিয়েই থাকত। ও যে কোনও সন্ত্রাসমূলক কাজে যুক্ত থাকতে পারে, তা ভাবতেও পারছি না (Delhi Red Fort Blast)।”
তদন্তকারীরা মনে করছেন, আল ফালাহ মেডিক্যাল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বা প্রাক্তন কর্মীর সঙ্গে উমরের যোগাযোগ ছিল, যাদের মধ্যে কিছু সন্দেহভাজনকে নজরবন্দি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের দিন তিনি একা ছিলেন নাকি কেউ তাঁকে সহায়তা করেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ডিএনএ রিপোর্ট প্রকাশের পর দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডের (Delhi Red Fort Blast) তদন্ত এক নতুন মোড় নিয়েছে। এখন গোয়েন্দাদের নজর উমরের যোগাযোগ এবং তাঁর জঙ্গি সংগঠনের সম্ভাব্য যোগের দিকে।












