বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ক্রমশই আরো বেশি জটিল হয়ে উঠছে নিউটাউন এনকাউন্টার মামলা। গত ৯ জুন কলকাতার নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সাপুরজিতে অতর্কিত অভিযান চালিয়ে পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টার জয়পাল ভূল্লার এবং যশপ্রীত সিংহ জসসিকে হত্যা করে পুলিশ। বীরভূমে একটি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার সূত্র ধরে এসটিএফ জানতে পেরেছিল কলকাতার ওই বিলাসবহুল আবাসনেই লুকিয়ে রয়েছেন পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত গ্যাংস্টার। যাদের নামে রয়েছে প্রায় ৫০ টিরও বেশি মামলা। আর তারপরেই ৯ জুন সুপারজি আবাসনে অতর্কিত অভিযান চালায় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় ওই দুই কুখ্যাত আসামীর।
কিন্তু এই মামলায় রহস্য এখানেই শেষ নয়, ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন আরো দুই অভিযুক্ত সুমিত কুমার এবং ভরত কুমার। পুলিশ আগেই জানতে পেরেছিল, এই মামলায় যোগ রয়েছে মাদকচক্রের। পাঞ্জাবের এক কনস্টেবল জানিয়েছিলেন, এরা হেরোইনের মত মারাত্মক মাদক পাচার করত বিভিন্ন এলাকায়। তাই এদের সঙ্গে পাক যোগ থাকতে পারে। সুমিত কুমার এবং ভরত কুমারকে গ্রেফতার করার পরও একই রকম তথ্য পেয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে গ্রেপ্তার হওয়া এই দুই ব্যক্তিও যুক্ত ছিলেন মাদক পাচারে। পুলিশ সূত্রের খবর ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান পাকিস্তানের একাধিক গ্যাংয়ের সাথেও যোগাযোগ ছিল তাদের।
এবার এই মামলায় যুক্ত হলো আরেকটি নয়া তথ্য। সামনে এল দুই রহস্যময়ী নারীর উপস্থিতি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনা ঘটার দুদিন আগের সিসি টিভি ফুটেজ চেক করতে গিয়ে এই দুই নারীর হদিশ পেয়েছে পুলিশ। গত ৭ জুন রাত প্রায় ৯ ‘টা ৩২ মিনিটে একটি কালো গাড়ি থেকে এই কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেন ওই দুই মহিলা এবং পরের দিন সকালবেলা প্রায় আটটা নাগাদ কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে যান।
কিন্তু ওই দুই রহস্যময়ী যে কুখ্যাত আসামিদের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন তার প্রমাণ কি? পুলিশ জানিয়েছে ওই রাতে একজন ডেলিভারি বয় এসেছিল চার প্যাকেট খাবার নিয়ে। যার হাত থেকে খাবার নেন কুখ্যাত গ্যাংস্টার যশপ্রীত। এছাড়া ওই ফ্ল্যাটের ডাস্টবিন থেকে পাওয়া গিয়েছে তিনটি ব্যবহৃত কন্ডোম। সেই কারণেই এ বিষয়ে আরো বেশি নিশ্চিত হচ্ছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে ওই দুই রহস্যময়ীর সন্ধান চলছে।
এছাড়া জানা গিয়েছে, প্রায় রোজই অনলাইনে খাবার অর্ডার করতেন ওই দুই কুখ্যাত আসামি। শুধু তাই নয় প্রায়ই শহরের একটি হুক্কাবারেও যেতেন তারা। লকডাউন এ সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী বন্ধ সমস্ত রেট্রো এবং হুক্কা বারগুলি। তাও কিভাবে এই হুক্কা বারটি খোলা ছিল তা এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সব মিলিয়ে এই রহস্য যে আরও বেশী জটিল হয়ে উঠছে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।