বাংলাহান্ট ডেস্ক: আমেরিকা সফরে গিয়ে ভারতের ব্যাপারে পশ্চিমী দুনিয়ার যাবতীয় অভিযোগের কড়া জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। ভারতে সংখ্যালঘুদের খুব খারাপ অবস্থায় রাখা হয়েছে – এমনই ধারণা রয়েছে পশ্চিমী দুনিয়ার। কিন্তু এ দিন সেই ধারণাই বদলে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আমেরিকার পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সে গিয়ে আমেরিকার মুখের উপর কড়া জবাব দিলেন নির্মলা সীতারামন।
পশ্চিমী দেশগুলি বারবার অভিযোগ করে এসেছে, ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করা হয়। এছাড়াও ভারতে নাকি মুসলিমদের ঠিক মতো মানবাধিকার দেওয়া হয় না। এমনও অভিযোগ করা হয়েছে বারবার। অর্থমন্ত্রী এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বললেন, পাকিস্তানের মুসলিমদের থেকে ভারতে অনেক ভাল আছেন তাঁরা। এ দিন ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি অ্যাডম এস পোসেন নির্মলা সীতারামনকে বিরোধী সাংসদদের সদস্যপদ বাতিল হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করেন।
পাশাপাশি ভারতে মুসলিমদের উপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের প্রচার নিয়েও প্রশ্ন করেন তিনি। এর উত্তরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানান, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে ভারতে। সেই জনসংখ্যা কেবল বাড়ছে। তাঁদের অবস্থা যদি সত্যিই এত খারাপ হত বা সরকার যদি তাঁদের জীবনযাপন কঠিন করে তুলত, তাহলে ১৯৪৭ সালের পর থেকে কি দেশে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ত? তিনি আরও বলেন, “সংখ্যালঘুর সংখ্যা কোনও দেশে কমে থাকলে সেটি হল পাকিস্তান।”
নির্মলা সীতারামন বলেন, “পাকিস্তান নিজেদের ইসলাম ধর্মাবলম্বী দেশ ঘোষণা করলেও সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার কথা বলেছিল। কিন্তু আজ সেখানে সংখ্যালঘুর সংখ্যা আরও কমে এসেছে।” এছাড়াও তাঁর অভিযোগ, ছোটখাটো ভুলের জন্য সংখ্যালঘুদের মৃত্যুদণ্ড অবধি দেওয়া হয় পাকিস্তানে। একইসঙ্গে তিনি কিছু মুসলিমদের বিরুদ্ধেও পাকিস্তানের অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, “শিয়া, মুজাহির এবং আরও অন্যান্য গোষ্ঠীর উপর হামলা চালানো হয় পাকিস্তানে। এই সব দেশগুলির কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। কিন্তু ভারতে মুসলিমরা নিশ্চিন্তে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন।”
পশ্চিমী সংবাদমাধ্যম ভারতের ব্যাপারে যেমন রিপোর্ট দেয়, তাতে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসতে কি কোনও অসুবিধা হয়? এ দিন অর্থমন্ত্রীকে এই প্রশ্নও করেন পোসেন। এর উত্তরে সীতারামন বলেন, “লগ্নিকারীরা ভারতে আসছেন। অনেক বিদেশি লগ্নিকারী বহু বছর ধরেই ভারতে বিনিয়োগ করছেন। আমি তাঁদের উদ্দেশ্যে বলব যে আপনারা নিজেরা দেখুন ভারতে কী হচ্ছে।” এ দিন পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমকে পুরোপুরি বিশ্বাস না করতে বলেন অর্থমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, রবিবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের একটি বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকা গিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।