বিধানসভা নির্বাচনে দীর্ঘ ২৫ বছর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ! কীভাবে করলেন অসাধ্যসাধন?

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল যেন আরও একবার ফিরিয়ে আনল নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) অপরাজেয় উপস্থিতিকে। রাজ্যের সবচেয়ে দীর্ঘকাল মুখ্যমন্ত্রী থাকার রেকর্ড তাঁর দখলেই ছিল, আর এবারের ফল প্রকাশের পর স্পষ্ট—আগামী আরও পাঁচ বছরও বিহারের প্রশাসনের শীর্ষে তাকেই দেখা যেতে পারে। ১৪ নভেম্বর ঘোষিত ফলাফলে এনডিএ-র ঝড়ে কার্যত ভেস্তে গিয়েছে বিরোধী মহাজোটের সমস্ত হিসেব। বিজেপির সঙ্গে তাল মিলিয়ে জেডি(ইউ)-র ঝকঝকে ফলাফলের পর আলোচনার কেন্দ্রে শুধু একটাই নাম—নীতীশ কুমার। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর নামে পোস্টার উঠে গিয়েছে, যেখানে তাঁকে বলা হয়েছে, ‘‘টাইগার এখনও জিন্দা হ্যায়।’’

২৫ বছর ধরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অপরাজেয় নীতীশ (Nitish Kumar)

তবে এবারের নির্বাচনে একটি বিষয় বহু ভোটারের মধ্যেই কৌতূহল তৈরি করেছে—নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) নিজে কোনও আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। শুধু এবারই নয়, গত ২৫ বছর ধরে তিনি কোনও বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন না। ২০০০ সালে যখন প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন, তখনও তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। কিন্তু কীভাবে এতদিন মুখ্যমন্ত্রী পদে থেকেছেন তিনি?

আরও পড়ুন:নয়া ফর্মুলাতেই RJD-র ‘জঙ্গলরাজ’ সাফ করেছে NDA! বিহার জয়ের পর গামছা উড়িয়ে কৃতজ্ঞতা মোদীর

এর উত্তর লুকিয়ে আছে তাঁর বিধান পরিষদ সদস্যপদে। ১৯৮৫ সালে হারনত আসন থেকে প্রথমবার বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন নীতীশ (Nitish Kumar)। ওই আসন থেকেই শেষবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ১৯৯৫ সালে, যদিও জিততে পারেননি। এরপর থেকে আর কখনও বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়াননি। কিন্তু ভারতের ছয়টি রাজ্যের মতো বিহারেও রয়েছে বিধান পরিষদ—বিধানসভার উচ্চকক্ষ। এখানে সদস্যরা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন না। বিধানসভায় দলগুলির আসনসংখ্যার ভিত্তিতেই বিধান পরিষদের সদস্যরা নির্বাচিত হন। তাঁদের মেয়াদ থাকে ছয় বছর, রাজ্যসভার সদস্যদের মতোই।

২০০০ সালের ৩ মার্চ একটানা আট দিনের জন্য প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতীশ (Nitish Kumar), যদিও তখন তিনি বিধানসভা বা বিধান পরিষদের কোনওটিরই সদস্য ছিলেন না। পরে ২০০৫ সালে ফের ক্ষমতায় ফিরে তিনি বিধান পরিষদের সদস্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে দায়িত্ব নেন এবং ২০১৪ পর্যন্ত সেই দায়িত্ব সামলান। ২০১৫ সালেও একই পদ্ধতিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন। জোট বদলেছেন বারবার—কখনো লালু প্রসাদের আরজেডি-র সঙ্গে, কখনো ফের এনডিএ-তে ফিরে—কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়েননি।

Nitish Kumar tops Bihar polls without contesting.

আরও পড়ুন: কনিষ্ঠতম বিধায়ক! নির্বাচনে জয়ের পরেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দে ভাসলেন মৈথিলী

২০২৪ সালে তিনি পুনরায় বিধান পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, যার মেয়াদ শেষ হবে ২০৩০ সালে। আর এবারের নির্বাচনে বিজেপি ও জেডি(ইউ)-র জোরদার জয় নিশ্চিত করেছে যে ৭৪ বছরের নীতীশ কুমারই (Nitish Kumar) আবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে চলেছেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং জোট রাজনীতিকে নিজের মতো করে চালানোর ক্ষমতা তাঁকে আজও বিহার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাখছে।