পিকনিক স্পট নয়, অহিন্দুদের মন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করল হাইকোর্ট! নোটিশ টাঙানোর নির্দেশ দিল আদালতের

বাংলা হান্ট ডেস্ক : হিন্দু মন্দির (Hindu Mandir) কেবল হিন্দুদের। হিন্দু মন্দিরে অহিন্দুদের ব্যবহার কি? সম্প্রতি এমনটাই মন্তব্য করল মাদ্রাজ হাইকোর্ট (Madrasa High Court)। বেশ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল, মন্দির সংবিধানের অনুচ্ছেদ নম্বর ১৫-র অধীনে আসে না। তাই কোনো মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশে বাধা দেওয়াকে অন্যায় বলা যাবে না। শুধু তাই নয়, প্রথা ও রীতি অনুযায়ী মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

মাদ্রাজ হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, পালানি মন্দিরের প্রবেশ গেটে এই ধরনের বোর্ড লাগানো উচিত, যাতে লেখা থাকে যে এই মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে মন্দিরের নির্ধারিত ড্রেস কোড এবং সনাতনী হওয়ার যথার্থ প্রমাণ দেখাতে হবে। এইদিন এই পিটিশনের শুনানির সময় বিচারপতি এস স্মৃতি বলেন, মন্দির পর্যটন কেন্দ্র বা পিকনিক স্পট নয়। যদি কেউ কেবল মন্দির ভবন দেখতে চান তবে তিনি মন্দিরের প্রবেশদ্বার থেকে এটি দেখতে পারেন। অথবা এইসব মানুষদের প্রবেশাধিকার পতাকা স্তম্ভ অর্থাৎ ‘কোদিমরণ’ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার জন্য মাদ্রাজ হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন পালানি হিল মন্দির ভক্ত সংস্থার আহ্বায়ক ডি সেন্থিলকুমার। এই দাবির পেছনে যুক্তি দেখাতে গিয়ে একাধিক তথ্য জমা করেছিলেন তিনি। যাতে বলা হয়েছিল, অহিন্দুরা মন্দিরে নানা অপকর্ম করে থাকে। যেমন, কিছুদিন আগেই তাঞ্জাভুরের বৃহদেশ্বর মন্দিরে মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ মাংস খেয়েছিল। অন্যদিকে হাম্পির বিখ্যাত মন্দিরে মাংস খেতে গিয়ে ধরা পড়ে একদল। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশের একটি মন্দিরে এক মুসলিম যুবক নামাজ পড়তে শুরু করেন, পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন : দক্ষিণবঙ্গে হাওয়া বদলের পূর্বাভাস, টানা ৭২ ঘন্টা তাণ্ডব চলবে এই ৯ জেলায়, ভয়ঙ্কর রিপোর্ট IMD-র

এই পিটিশনে আরও একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন সেন্থিলকুমার। তিনি জানান, বোরখা পরা কিছু মহিলা এবং মুসলিম যুবকরা পালানি মন্দিরে টিকিট কাটছিলেন। মন্দির কর্তৃপক্ষ তাদের টিকিট দিতে অস্বীকার করলে তারা বলেন, এই মন্দির একটি পর্যটন স্থান এবং সেখানে যে কেউ সেখানে যেতে পারেন। এইসব কারণেই ডি সেন্থিলকুমার জানিয়েছেন দেশের মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা উচিত। তার মতে, কেবল পাহাড়ি মন্দির কমপ্লেক্স এবং মন্দিরগুলিতে শুধুমাত্র হিন্দুদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন : CBI-ED নয়, এবার গুরুতর অভিযোগ CID-র! নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়াল বিনয় তামাং ও তৃণাঙ্কুরের

palani overview

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগেও মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য একটি বোর্ড বসানোর কথা বলেছিল আদালত। এরপর সেন্থিলকুমারের আবেদনের পর ফের একবার নড়েচড়ে বসে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। শুনানিতে আদালত আরও বলেছে, সংবিধান প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার ধর্ম পালন ও পালন করার অধিকার দেয়। তবে তাদের সাথে যুক্ত ধর্মীয় রীতিনীতি ও অনুশীলনে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। আদালত আরও বলে যে, হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মের মধ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি তখনই বিরাজ করবে যখন বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা একে অপরের বিশ্বাস এবং অনুভূতিকে সম্মান করবে।


Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর