বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেল দুর্ঘটনায় হারিয়েছিলেন একমাত্র ছেলেকে। শোকাতুর দম্পতির কোল আলো করে এলো জোড়া সন্তান। আনন্দের জোয়ার বয়ে গিয়েছে পরিবার। ঘটনাটি অশোকনগর (Ashoknagar) কাকপুল নয়া সমাজ এলাকার। ২০১৯ সালে রেল দুর্ঘটনায় ছেলেকে হারিয়েছিলেন অশোকনগরের দত্ত দম্পতি। শোকের যন্ত্রনা কাটিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সহায়তায় ফের মা বাবা হলেন ৭০ বছর বয়সী তপন দত্ত ও তার স্ত্রী ৫৪’র রুমা দত্ত।
নিজেদের একমাত্র ছেলেকে হারানোর পর শোকে ভেঙে পড়েন ওই দম্পতি, ছেলে অনিন্দ্যই ছিল তাদের গোটা পৃথিবী জুড়ে। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন পুনরায় নতুন প্রাণ পৃথিবীতে নিয়ে আসার। তবে সেই সিদ্ধান্তে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তাদের বয়স। যেহেতু দম্পতির বয়সটা অনেকটাই বেশি, সেক্ষেত্রে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। তবে সমস্ত প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সম্প্রতি মা – বাবা হয়েছেন তারা। কোল আলো করে এসেছে যমজ সন্তান। ২০২২ এর অক্টোবর এক ছেলে ও এক মেয়ের সুস্থভাবে জন্ম দেন তপনবাবুর স্ত্রী রুমা দত্ত।
এ বিষয়ে তপন দত্ত জানিয়েছেন, “আমি পুলিশে কাজ করতাম। ২০১৯ সালে আমার একমাত্র সন্তান একটা ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যায়। আমরা তখন দিশাহারা। আমাদের মানসিক যে কষ্ট এবং একাকিত্ব বলে বোঝাতে পারব না। ধীরে ধীরে ভাবতে থাকি আমাদের অবলম্বন দরকার। কলকাতার বহু ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করি। তাদের মতামত নিই। কতটা কী ঝুঁকি আছে সবটা জানি। তারপরই সিদ্ধান্ত নিই বাচ্চা নেব। সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে, আমরা চেয়েছিলাম কষ্ট কিছুটা ভুলে থাকতে।
উনি আরও জানান, কলকাতার ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে করতেই হাওড়ার বালির এক ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওনাকে সবটা জানাই। আমাদের বয়সের বিষয়টা আগে জানাই। ২০২১ সালের অক্টোবর নভেম্বর নাগাদ ওনার কাছে চিকিৎসাও শুরু করি। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে আমার স্ত্রী কনসিভ করেন। কনসিভ করার পর ওর চিকিৎসা চলছিল। শেষের দিকে স্ত্রীর অবস্থা খারাপও হয়। ১২ তারিখ ডেলিভারি করানোর কথা ছিল। স্ত্রীর হঠাৎ শরীর বেশি খারাপ হওয়ায় আগেই প্রসব করাতে হয়।” দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর যমজ সন্তানের জন্মে রীতিমতো আনন্দের জোয়ারে ভাসছে গোটা দত্ত পরিবার।