বাংলা হান্ট ডেস্ক : পশ্চিমবাংলা যে বারুদের স্তূপের ওপর বসে রয়েছে সেকথা বারংবার প্রমাণিত হয়ে যাচ্ছে। এর আগে একাধিকবার বহু জঙ্গি তাদের আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে বাংলাকে। বর্তমানে পরিস্থিতি যে আরো ভয়ানক হয়ে উঠেছে সেকথা নতুন করে বলে দেওয়ার আর প্রয়োজন নেই। এই কদিন আগের কথা, বেঙ্গালুরুতে ক্যাফে বিস্ফোরণ (Bengaluru Cafe Blast) ঘটে কিন্তু সারা ভারত ছেড়ে জঙ্গিরা আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নেয় এই বাংলাকে।
বেঙ্গালুরুর সেই খুনে দুই জঙ্গি ধরা পড়ে। কিন্তু তারা ডেরা হিসেবে বেছে নেয় নিউ দিঘাকে। সেখানে একপ্রকার ছুটি কাটাচ্ছিল তারা। নিউ দিঘার হোটেলে লুকিয়ে থাকা দুই জঙ্গির দুজনকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু এরপর তদন্ত করতেই উঠে আসে যে, দুইজন নয় বরং তিনজন জঙ্গি এসেছিল কলকাতায়। তৃতীয় জনের নাম মুজাম্মিল শরিফ। বিস্ফোরণের পর তাকে চেন্নাইতে প্রথমবারের জন্য গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু জানেন কি এই মুজাম্মিলের ভূমিকাটা ঠিক কী ছিল?
তদন্ত থেকে উঠে এসেছে যে, মুজাম্মিল এরাজ্যে এসেছিল টাকা দেওয়ার জন্য। দুই জঙ্গি আব্দুল মাখিন আহমেদ ত্বহা ও মুসাভির হুসেন শাজিবকে এই রাজ্যে এসে টাকা দিয়ে যায় মুজাম্মিল। তারপরই সে ধরা পড়ে। মুজাম্মিলকে ধরতেই তদন্তকারী সংস্থা NIA সাজিবদের বিষয়ে জানতে পারে। প্রাথমিক ভাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে জঙ্গিরা এখান থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে হয়তো। তবে এটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বাংলায় তাদের কোনো মডিউল কাজ করছে কিনা। এছাড়া রাজ্যে তাদের কেউ পরিচিত অথবা সাহায্য করার কেও রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : মালদা পেরোতেই শুরু অ্যাটাক! বন্দে ভারতে পাথর-হামলা, ভাঙল কাচ! আতঙ্কিত যাত্রীরা
সন্দেহ এড়াতে তারা বিভিন্ন পর্যটনস্থানকে বেছে নেয়। তবে প্রশ্ন উঠছে কি করছিল কলকাতা পুলিশ। কারণ শহর কলকাতার একের পর এক হোটেলে তারা আশ্রয় নেয়, তারপর দিঘা চলে যায় কিন্তু পুলিশ কিছুই জানতে পারল না। এখান থেকে কলকাতা পুলিশের ব্যর্থতা বেশ ভালরকম প্রকাশ পাচ্ছে। অথচ NIA আগেভাগেই তাদের এই বিষয়ে অ্যালার্ট করে। ওয়ান্টেড জঙ্গিদের তালিকায় NIA নাম উল্লেখ করে জঙ্গি মুসাভির হুসেন শাজিব ওরফে শাজেব, মহম্মদ জুনেদ হুসেন, মহম্মদ জুনেদ সৈয়দের।
আরও পড়ুন : জয় দিয়েই বর্ষবরণ নাইটদের, জাত চেনাল স্টার্ক! লখনউকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল KKR
NIA শাজিবের চেহারা সম্পর্কেও জানিয়েছিল, তারা উল্লেখ করে এই জঙ্গির বয়স ৩০, ফর্সা, জিম করা চেহারা এবং পরনে ছিল টি শার্ট আর জিন্স। এছাড়া ত্বহাকে ঘিরেও বেশ কিছু নোটিশ জারি করে NIA। উল্লেখ্য যে, এই জঙ্গি ব্যবহার করতো হিন্দু নাম। তারও পরনে ছিল টি শার্ট, জিন্স, হুডিজ, ক্যাপ। এই জঙ্গিটি আবার নিজেকে লুকিয়ে রাখতে সর্বদাই ভুয়ো হিন্দু পরিচিতি ব্যবহার করে। পুরো ঘটনায় মুখ পুড়েছে বাংলা এবং কলকাতা পুলিশের। তবে কলকাতা পুলিশ যে জঙ্গিদের ধরতে অপারগ সেকথা আবারও প্রমাণ করে দিল তারা।