বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রায়শই বিভিন্ন মহাজাগতিক ঘটনার বিষয়ে বিজ্ঞানীরা সাবধান করেন আমাদের। তবে, এবার একটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, পৃথিবীর (Earth) দিকে এবার ধেয়ে আসছে সৌরঝড় (Solar Storm)। ইতিমধ্যেই, আবহাওয়া দফতরের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের তরফে এমন একটি সতর্কবার্তা জারি করা হয়। মূলত বলা হয়েছে যে, পৃথিবী জি১ স্তরের ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের মুখোমুখি হতে পারে।
এছাড়াও, এই ঝড়ের প্রভাবে মেরু প্রদেশের আকাশে অরোরা তৈরি হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, নেভিগেশন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্নিত হওয়া ছাড়াও এই সৌরঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবাতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টার জানিয়েছে, সূর্য যখন প্রবল পরিমাণ শক্তি উগরে দেয় বা নির্গত করে ঠিক সেই সময়ে এইরকম ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের সৃষ্টি হয়। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ইতিমধ্যেই মৃদু ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে। যার ফলে পৃথিবীতে দ্রুতগতির ঝোড়ো হাওয়া বা সোলার উইন্ড আছড়ে পড়ছে।
এদিকে, সৌর ঝড়ের আবহেই ধেয়ে আসছে কোরোনাল মাস ইজেকশন। যেটি আবার সৌর ঝড়ের থেকে আলাদা। জানিয়ে রাখি যে, কোরোনাল মাস ইজেকশন অর্থাৎ সিএমই হল সূর্যের করোনা থেকে নিঃসৃত বিপুল পরিমাণ প্লাজমা ও চৌম্বকক্ষেত্র। এগুলির গতি কমবেশি হওয়ার কারণে সিএমই পৃথিবীতে পৌঁছতে সময় নেয় ১৫ থেকে ১৮ ঘন্টা। এদিকে এগুলি পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের সাথে প্রতিক্রিয়া ঘটিয়ে বিঘ্ন ঘটাতে পারে বিদ্যুৎ পরিষেবা সহ কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও।
X FLARE! Sunspot region AR3663 just produced an X1.7 flare, the 11th largest flare so far this cycle. It was an impulsive flare lasting a total of about 25 minutes and peaking at 02:22 U.T. This is the 30th X flare so far during SC25, compared to just 19 at the same stage in SC24 pic.twitter.com/zYgvqjm0Af
— Keith Strong (@drkstrong) May 3, 2024
জানিয়ে রাখি, বর্তমান সময়ে সূর্য সৌর চক্র অনুযায়ী তার কার্যকলাপের শীর্ষ পর্যায় পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে প্রতি ১১ বছরের সময়কালে সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্র এটি চক্রের মধ্য দিয়ে যায়। অর্থাৎ সূর্যের উত্তর এবং দক্ষিণ মেরু স্থান পরিবর্তন করে। আর একইভাবে মেরুগুলি নিজেদের জায়গায় ফিরে আসতে ফের ১১ বছর সময় নেয়। এই নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের একাধিক শিখা প্রকাশ করে। যেগুলি পৃথিবীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। জানা গিয়েছে যে, কয়েকদিন আগেই সানস্পট অঞ্চল AR3663 থেকে ২ টি বিশাল সৌর শিখা বেরিয়েছে। যার ফলে পৃথিবী বর্তমানে ফায়ারিং লাইনে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় দলের নতুন জার্সিতে আছে একটি তারা! এর সাথে লুকিয়ে রয়েছে গৌরবের ইতিহাস
এগুলির মধ্যে, ২ মে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। যেটি ছিল একটি এক্স ক্লাস ফ্লেয়ার। এর ফলে, অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে জাপান এবং চিনের বেশিরভাগ অংশজুড়ে শর্টওয়েভ রেডিও ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি করেছিল। পাশাপাশি, দ্বিতীয় অগ্ন্যুৎপাতটি ৩ মে রিপোর্ট করা হয়। যেটি এম ক্লাস ফ্লেয়ার ছিল বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: চোখে জল! গ্রাস করেছে হতাশা, ড্রেসিং রুমে কেঁদে ফেললেন হিটম্যান, মন খারাপ অনুরাগীদের
এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সৌর পদার্থবিদ কিথ স্ট্রং জানিয়েছেন, “এক্স ফ্লেয়ার, সানস্পট অঞ্চল AR3663 এখন একটি X 1.7 ফ্লেয়ার তৈরি করেছে। যেটি এই চক্রের এখনও পর্যন্ত ১১ তম বৃহত্তম ফ্লেয়ার।” এটি প্রায় ২৫ মিনিট পর্য়ন্ত স্থায়ী হয়েছিল এবং ০২:২২ UT-তে শীর্ষে ছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।