চাঁদ-সূর্যকে “হ্যালো” জানিয়ে এবার গভীর সমুদ্রে পৌঁছবে ভারত! শুরু হতে চলেছে এই দুর্ধর্ষ মিশন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই চন্দ্রযান-৩ (Chandrayann-3)-এর মাধ্যমে সফলভাবে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে ইতিহাস তৈরি করেছে ভারত (India)। পাশাপাশি, ঠিক তারপরেই সূর্যের দেশে পাড়ি দিয়েছে আদিত্য-L1 (Aditya L-1)। তবে, এবার বিজ্ঞানীরা আরও এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটাতে চলেছেন। যেটি জানার পর অবাক হয়ে যাবেন প্রত্যেকেই। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, এবার ভারতীয় বিজ্ঞানীরা সমুদ্রযান মিশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এই মিশনের মাধ্যমে সমুদ্রের ৬,০০০ মিটার গভীরে তিনজন বিজ্ঞানীকে পাঠানো হবে। ইতিমধ্যেই এই মিশনের জন্য “মেড ইন ইন্ডিয়া” সাবমার্সিবল “মৎস্য ৬০০০” (Matsya 6000)-ও প্রস্তুত করেছেন বিজ্ঞানীরা। যেটি তৈরিতে নিকেল, কোবাল্ট এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারতের আগে, শুধুমাত্র আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, ফ্রান্স এবং চিনের মতো দেশগুলি মনুষ্যবাহী সাবমার্সিবল তৈরিতে সফল হয়েছে।

এদিকে, সম্প্রতি টাইটান সাবমেরিন ডুবে যাওয়ার পর ভারতীয় বিজ্ঞানীরা এই সাবমার্সিবল তৈরিতে বিশেষ নজর দিয়েছেন। এর জন্য, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজির (National Institute of Ocean Technology, NIOT) বিজ্ঞানীরা সাবমার্সিবলের ডিজাইন, উপকরণ, পরীক্ষা, সার্টিফিকেশন এবং স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতির ওপর বিশেষ নজর দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: এবার বিদেশ থেকে টাকা আনার ঝঞ্ঝাট খতম! কম খরচেই পাঠানো যাবে বেশি অর্থ, বড় পদক্ষেপ সরকারের

চেন্নাই উপকূলে প্রথম ট্রায়াল সম্পন্ন হবে: জানিয়ে রাখি যে, সাবমার্সিবল “মৎস্য”-কে তৈরি করতে ২ বছর সময় লেগেছে। তথ্য অনুসারে, এই সাবমার্সিবলটি ২০২৪ সালের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যাবে। তারপরে চেন্নাই উপকূলে বঙ্গোপসাগরে এটির প্রথম পরীক্ষা হবে। এই প্রসঙ্গে ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রকের সচিব এম রবিচন্দ্রন জানিয়েছেন যে, “সমুদ্রযান মিশনের অধীনে, আমরা আগামী বছরের প্রথম ত্রৈমাসিক নাগাদ ‘মৎস্য’ সাবমার্সিবলের ট্রায়াল সম্পন্ন করতে চলেছি। এই ট্রায়ালটি সমুদ্রের ৫০০ মিটার গভীরতায় হবে।” পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন যে, এই মিশনটি ২০২৬ সাল নাগাদ সম্পন্ন হবে।

আরও পড়ুন: বড় খবর! লঞ্চের দিন থেকেই “মেড ইন ইন্ডিয়া” iPhone 15 বিক্রি শুরু করবে Apple, কতটা কমবে দাম?

বিভিন্ন গবেষণা চালাবে “মৎস্য”: প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এই সাবমার্সিবল নিকেল, কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, হাইড্রোথার্মাল সালফাইড এবং গ্যাস হাইড্রেটের অন্বেষণ ছাড়াও, হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট এবং কেমোসিন্থেটিক জীববৈচিত্র্যের অনুসন্ধান করবে।

এই সাবমার্সিবল ৬০০ বার পর্যন্ত চাপ সহ্য করতে পারে: এই প্রসঙ্গে NOIT-র ডিরেক্টর জিএ রামদাস জানিয়েছেন যে, “মৎস্য ৬০০০”-এর ব্যাস ২.১ মিটার রাখা হয়েছে। যাতে ৩ জনকে সহজেই নামানো যায়। এই সাবমার্সিবলটি ৮০ মিমি পুরু টাইটানিয়াম অ্যালয় দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। যাতে ৬০০ বার পর্যন্ত চাপ সহ্য করা যায় (সমুদ্র সমতলের চাপের চেয়ে ৬০০ গুণ বেশি)। এছাড়াও, এটি ১২ থেকে ১৬ ঘন্টা একটানা চালানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই ডুবোজাহাজে অক্সিজেন সরবরাহ থাকবে ৯৬ ঘণ্টার।” এছাড়াও তিনি বলেন, “মৎস্য ৬০০০”-এর লঞ্চের সময়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। যেখানে জাহাজ থেকে সাবমার্সিবল মোতায়েন করার পরে, জলের নিচে ভালোভাবে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য জাহাজটি সাবমার্সিবলের ঠিক ওপরেই থাকবে।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর