বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহাকাশের অজানা রহস্য আবিষ্কারের জন্য ভারত এখন স্পেস রেসে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যেই চাঁদ, মঙ্গল এবং সূর্যের উদ্দেশ্যে অভিযান সম্পন্ন করেছে ISRO (Indian Space Research Organisation)। তবে, এবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা শুক্র গ্রহের গোপনীয়তা ভেদ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত মঙ্গলবার এই ঘোষণা করেছেন ISRO চেয়ারম্যান এস. সোমনাথ (S. Somanath)।
এই প্রসঙ্গে রাজধানী নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমিতে ভাষণ দিতে গিয়ে সোমনাথ বলেন, “আমাদের নক্ষত্রমণ্ডলের সবথেকে উজ্জ্বল গ্রহ শুক্রে মিশন পাঠানোর জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এর জন্য পেলোড ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে।” পাশাপাশি, পৃথিবী এবং শুক্রের মধ্যে সাদৃশ্যের বিষয়টি উল্লেখ করে সোমনাথ বলেন, “শুক্র একটি আকর্ষণীয় গ্রহ এবং এটির এক্সপ্লোর করা মহাকাশ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহায্য করবে।”
শুক্রের বায়ুমণ্ডল অ্যাসিডে পূর্ণ: তিনি বলেন, “পৃথিবীর মতো শুক্রেরও একটি বায়ুমণ্ডল রয়েছে। এর বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত ঘন। এই বায়ুমণ্ডলের চাপ পৃথিবীর চেয়ে ১০০ গুণ বেশি এবং এটি অ্যাসিডে পূর্ণ। আপনি এর পৃষ্ঠে প্রবেশ করতে পারবেন না। আপনি জানেন না এর পৃষ্ঠটি ঠিক কেমন।”
এদিকে, পৃথিবীতে জীবনের জন্য ভবিষ্যতে কঠিন চ্যালেঞ্জের আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা শুক্র গ্রহকে বোঝার চেষ্টা করছি। কারণ পৃথিবীর অবস্থাও একদিন শুক্রের মতো হতে পারে। এটা হতে পারে যে ১০,০০০ বছর পরে আমাদের গ্রহ তার বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করবে। পৃথিবী আজকের মতো ছিল না। বহুকাল আগে এটি মোটেও বাসযোগ্য ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টে যায় এবং আজ এখানে জীবনই জীবন রয়েছে।”
উল্লেখ্য যে, শুক্রকে পৃথিবীর যমজও বলা হয়। কারণ এটি আকার এবং ঘনত্বে পৃথিবীর সমান। এদিকে, সোমনাথ আরও জানান যে, ভারতে রকেট তৈরিতে ব্যবহৃত প্রায় ৯৫ শতাংশ উপাদান দেশীয় উৎস থেকে তৈরি হয়। রকেট ও স্যাটেলাইটের উন্নয়নসহ যাবতীয় প্রযুক্তিগত কাজ দেশেই হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: দুর্দান্ত পলিসি LIC-র! এবার মাত্র ১০০ টাকা জমা করেই পেয়ে যান ৭৫ হাজার টাকার লাভ সহ একাধিক সুবিধা
কোন দেশগুলি ইতিমধ্যে শুক্র গ্রহে মিশন পাঠিয়েছে: জানিয়ে রাখি যে, শুক্র সম্পর্কিত মিশনে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA-র পার্কার সোলার প্রোব শুক্রের বেশ কয়েকটি চক্কর সম্পন্ন করেছে। ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, NASA জানিয়েছিল যে পার্কার সোলার প্রোব ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মহাকাশ থেকে শুক্রের পৃষ্ঠের প্রথম ভিজিবল লাইট ইমেজ নিয়েছিল। এর বাইরে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA)-র ভেনাস এক্সপ্রেস (যা ২০০৬ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করছিল) এবং জাপানের আকাতসুকি ভেনাস ক্লাইমেট অরবিটার (যা ২০১৬ সাল থেকে প্রদক্ষিণ করছে) ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এদিকে, ISRO এর আগে ২০১৪ সালে মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করে ইতিহাস তৈরি করেছিল। এরপরে, সম্প্রতি চাঁদে চন্দ্রযান-৩ এর ঐতিহাসিক “সফট ল্যান্ডিং” সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও, সূর্যের বাইরের স্তর স্টাডির জন্য আদিত্য L-1 মিশন সফলভাবে লঞ্চ করা হয়েছে। যা বর্তমানে L-1 বিন্দুতে পৌঁছনোর পথে রয়েছে।