বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি তুমুল চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত শুক্রবার গভীর রাতে কলকাতায় (Kolkata) মার্কিন দূতাবাসের সামনে এক পাকিস্তানি মহিলার সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। এমতাবস্থায়, সন্দেহের ভিত্তিতে ওই মহিলাকে আটক করে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে প্রমাণের অভাবে ২৪ ঘণ্টা পর তাঁকে ছেড়ে দেয় কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সীমা হায়দারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশ এই ঘটনায় বিশেষ সতর্ক রয়েছে।
জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার রাতের অন্ধকারে কলকাতার হো চি মিন সরণিতে মার্কিন দূতাবাসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন ওই মহিলা। সিসিটিভিতে তাঁকে সন্দেহজনকভাবে চলাফেরা করতে দেখে ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদিকে, তাঁর কাছ থেকে পাকিস্তানি পাসপোর্ট পেয়ে পুলিশ আরও সতর্ক হয়। এছাড়াও, ওই মহিলার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বেশ কয়েকটি মোবাইল থেকে পাকিস্তানের হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রামে কয়েকটি কল এবং সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাট দেখার পরে সন্দেহ আরও বেড়ে যায় পুলিশের।
মূলত, কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানি নাগরিক সীমা হায়দারের সন্ধান পায় উত্তরপ্রদেশের এটিএস। তারপর থেকেই দেশের প্রতিটি রাজ্য ও শহরে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। এদিকে, মার্কিন দূতাবাসের সামনে পাকিস্তানি মহিলার এই সন্দেহজনক আচরণের বিষয়টি পুলিশের চিন্তা বৃদ্ধি করেছে।
পাশাপাশি, পুলিশ ওই মহিলাকে হেফাজতে নিয়ে প্রায় ২৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে গোয়েন্দারা আইএসআই বা কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সাথে ওই মহিলার সংযোগের কোনো প্রমাণ পাননি। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মীয়ের মাধ্যমে কলকাতার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ওই পাকিস্তানি মহিলার। করোনার জেরে চলা লকডাউনের পরে তিনি ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর দিল্লি হয়ে পাকিস্তান থেকে কলকাতায় আসেন।
ওই পাকিস্তানি মহিলা তাঁর স্বামীর সাথে কলকাতায় থাকেন: এছাড়াও, আরও জানা গিয়েছে তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে থাকেন কলকাতার তালতলা এলাকায়। ওই মহিলার স্বামী কর্মহীন হওয়ায় তিনিই কাজ করেন। প্রায় ৬ মাস আগে মধ্য কলকাতার তালতলা এলাকায় বহুতল ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন ওই দম্পতি। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই নারীর এদেশের ভিসা রয়েছে।
এমতাবস্থায়, ওই পাকিস্তানি মহিলা দাবি করেছেন যে যেহেতু, তাঁর ভিসার মেয়াদ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শেষ হবে, তাই তিনি মধ্যপ্রাচ্য হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেখানে জীবিকা অর্জনের পরিকল্পনাও ছিল তাঁর। তাই তিনি মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ করতে গিয়েছিলেন। ওই মহিলা একটি বিউটি পার্লারে কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, পুলিশ ওই সন্দেহভাজন মহিলার স্বামীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে ওই মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও পুলিশ তাঁর গতিবিধির ওপর নজর রাখছে।