বাংলাহান্ট ডেস্ক: এবার আরবিআই-এর ই-রুপিতে (RBI eRupee) আমূল পরিবর্তন। ভারতের ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় নতুন যুগের সূচনা করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। মুম্বইয়ে আয়োজিত গ্লোবাল ফিনটেক ফেস্ট ২০২৫-এর মঞ্চ থেকেই চালু হল অফলাইন ই-রুপি এমন এক ডিজিটাল মুদ্রা, যার মাধ্যমে এখন থেকে ইন্টারনেট বা মোবাইল ডেটা ছাড়াই টাকা পাঠানো বা পেমেন্ট করা যাবে।
আরবিআই-এর ই-রুপিতে (RBI eRupee) অফলাইনেই পাঠানো যাবে টাকা
এই ই-রুপি (RBI eRupee) আসলে এক ধরনের সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (CBDC), যা ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে চালু করা হয়েছিল। এটি ভারতীয় টাকারই ডিজিটাল সংস্করণ — এর মান ও গ্রহণযোগ্যতা কাগুজে টাকার সমান। পার্থক্য শুধু এটুকুই, এটি থাকে ডিজিটাল ওয়ালেটে। অর্থাৎ, যেমনভাবে আপনি দোকানদারকে নগদ টাকা দেন, তেমনি এবার মোবাইলের ওয়ালেট থেকেই সরাসরি পেমেন্ট করা যাবে — তাও ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করেই।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াতেই কেরিয়ারের শেষ সিরিজ খেলবেন রোহিত-কোহলি? কী জানাল BCCI?
আরবিআই জানিয়েছে, ই-রুপি (RBI eRupee) হবে ‘ডিজিটাল ক্যাশ’-এর বিকল্প, যা অ্যাপ-টু-অ্যাপ ট্রান্সঅ্যাকশন ভিত্তিক। অর্থাৎ এখানে ব্যাংক নয়, বরং এক ব্যবহারকারীর ওয়ালেট থেকে অন্য ব্যবহারকারীর ওয়ালেটে টাকা স্থানান্তরিত হবে। ফলে ইন্টারনেট না থাকলেও, কেবলমাত্র মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকলেই লেনদেন সম্ভব। বর্তমানে এটি এনএফসি (NFC) প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষাধীন রয়েছে।
ই-রুপি (RBI eRupee) ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ই-রুপি অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। আপাতত ১৫টি ব্যাংক এই রিটেল সিবিডিসি (CBDC) পাইলট প্রকল্পের অংশ, যার মধ্যে রয়েছে — স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, আইসিআইসিআই, এইচডিএফসি, অ্যাক্সিস, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক, ইয়েস ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, কোটাক মহীন্দ্রা, ক্যানারা, আইডিএফসি ফার্স্ট, ইন্ডাসইন্ড, ইন্ডিয়ান ব্যাংক, কর্ণাটক ব্যাংক ও ফেডারেল ব্যাংক।
আরও পড়ুন: দীপাবলীর আগে আরও বাড়ল সোনার দাম, ১০ গ্ৰাম গহনা কিনতে কত খরচ পড়বে জানেন?
ই-রুপি (RBI eRupee) ওয়ালেটেই রয়েছে QR কোড স্ক্যানার, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা যেকোনও ব্যবসায়ীর UPI QR কোড স্ক্যান করে পেমেন্ট করতে পারবেন। এতে ই-রুপি এবং ইউপিআই-এর মধ্যে এক সহজ সংযোগ তৈরি হয়েছে। এই ব্যবস্থায় কোনও অতিরিক্ত ফি বা ন্যূনতম ব্যালান্সের প্রয়োজন নেই।আরও একটি বড় সুবিধা হল নিরাপত্তা। যদি ফোন হারিয়ে যায়, তাহলেও ওয়ালেট পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। যদিও এই ডিজিটাল মুদ্রায় কোনও সুদ পাওয়া যায় না, তবুও আরবিআই জানিয়েছে, এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং ট্রাস্টেড।
ফলে এখন থেকে শহর থেকে গ্রাম — যেখানে ইন্টারনেট পৌঁছায় না, সেখানেও ডিজিটাল লেনদেন সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ ভারতের ডিজিটাল অর্থনীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে নগদবিহীন লেনদেনের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। ই-রুপি (RBI eRupee) চালুর মধ্য দিয়ে ভারতের ফিনটেক ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা হল — যেখানে ক্যাশ নয়, ‘ডিজিটাল ক্যাশ’-ই হয়ে উঠবে নতুন প্রজন্মের হাতিয়ার।