বাংলা হান্ট ডেস্ক: বহুদিন থেকেই শোনা গিয়েছিল যে, টাটা গ্রুপ (Tata Group) এবার ভারতের বৃহত্তম প্যাকেজড ওয়াটার কোম্পানি বিসলেরি ইন্টারন্যাশনালের (Bisleri International) একটি অংশীদারিত্বকে কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে, এবার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিসলেরির প্রতিষ্ঠাতা রমেশ চৌহান তাঁর বোতলজাত পানীয় ব্র্যান্ড “বিসলেরি ইন্টারন্যাশনাল”-কে টাটা কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড (Tata Consumer Products Limited, TPCL)-এর কাছে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমতাবস্থায়, TPCL ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে বিসলেরিকে কিনতে পারে।
ম্যানেজমেন্ট চালিয়ে যাবে কাজ: এই প্রসঙ্গে ইকোনমিক টাইমসের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, এই দুই কোম্পানির মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বর্তমানে সক্রিয় থাকা বিসলেরির ম্যানেজমেন্ট দুই বছর যাবৎ কাজ চালিয়ে যাবে। উল্লেখ্য যে, ৮২ বছর বয়সী রমেশ চৌহান গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি জানান যে বিসলেরিকে সম্প্রসারণের পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর কোনো উত্তরসূরি নেই। এছাড়াও, তিনি জানান যে, তাঁর মেয়ে জয়ন্তী ব্যবসায় খুব বেশি আগ্রহী নয়।
টাটা গ্রুপ বিসলেরিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে: চৌহানের মতে, এবার টাটা গ্রুপ বিসলেরির ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। যদিও, বর্তমানে বিসলেরিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চৌহানের পক্ষে সহজ ছিল না। এমতাবস্থায়, ব্যবসার ভবিষ্যৎ অবস্থা বিবেচনা করে চৌহান এটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অনেক কোম্পানি চেষ্টা করেছে: ইতিমধ্যেই বিসলেরিকে কেনার জন্য রিলায়েন্স রিটেল, নেসলে এবং ড্যানোন সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা চেষ্টা করেছিল। যদিও, টাটার সাথে দুই বছর ধরে এই প্রসঙ্গে চলছিল আলোচনা। কয়েক মাস আগেই টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরন এবং টাটা কনজিউমারের সিইও সুনীল ডি’সুজার সাথে দেখা করার পরে, রমেশ চৌহান কোম্পানিটিকে টাটার কাছে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। এই প্রসঙ্গে ET-র খবর অনুযায়ী, টাটা গ্রুপ গত ১২ সেপ্টেম্বর বিসলেরিকে কেনার জন্য একটি প্রস্তাব দিয়েছিল।
রমেশ চৌহান সম্পূর্ণ অংশীদারিত্ব বিক্রি করবেন: জানা গিয়েছে, টাটার কাছে বিসলেরির ব্যবসা বিক্রি করার পর, রমেশ চৌহান তাঁর কাছে কোনো অংশীদারিত্ব রাখতে চান না। এদিকে, বোতলজাত জলের ব্যবসা বিক্রি করার পরে, চৌহান পরিবেশগত এবং বিভিন্ন সামাজিক কাজে সময় দিতে চান। যার মধ্যে রয়েছে জল সংরক্ষণ, প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার এবং দরিদ্রদের চিকিৎসা প্রদান সম্পর্কিত বিষয়গুলি।
চুক্তিটি কোকা-কোলার সাথেও করা হয়েছিল: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১৯৯৩ সালে, কোকা-কোলা রমেশ এবং তাঁর ভাই প্রকাশের কাছ থেকে কোম্পানির পানীয়গুলির সম্পূর্ণ পোর্টফোলিও কিনেছিল। সেই সফট ড্রিঙ্কগুলির মধ্যে সিট্রা, রিমজিম এবং মাজার মতো ব্র্যান্ডগুলি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, এবার টাটা কনজিউমার Fast-moving Consumer Goods (FMCG)-এর জগতে ক্রমশ তার উপস্থিতি স্পষ্ট করতে চাইছে। ইতিমধ্যেই কোম্পানিটি হিমালয়ান ব্র্যান্ডের অধীনে প্যাকেজড মিনারেল ওয়াটারের পাশাপাশি টাটা কপার প্লাস ওয়াটার এবং টাটা গ্লুকো প্লাসও বিক্রি করে। এমতাবস্থায়, বিসলেরিকে কেনার পর বোতলজাত পানীয়ের সেগমেন্টে টাটা প্ৰথম স্থানে পৌঁছতে চায়।