বাংলা হান্ট ডেস্ক: মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার (The National Aeronautics and Space Administration, NASA) ৩৪.৪০ কোটি ডলারের মহাকাশযান পৃথিবীকে গ্রহাণুদের আক্রমণ থেকে রক্ষার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। মূলত, এই ডার্ট যানটি পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য নাসার অনন্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। যেটির নাম দেওয়া হয়েছে ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট মিশন বা DART। এই যানের মাধ্যমে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহাণুগুলির গতিপথ ঘুরিয়ে বা ভেঙে ফেলার কৌশল পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই সমগ্ৰ ঘটনাটি নাসা কর্তৃক সরাসরি সম্প্রচারও করা হয়েছে।
ডার্ট মিশনের এই যানটি প্রায় ১০ মাস আগে পৃথিবী থেকে রওনা হয়। শুধু তাই নয়, পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য এটি ইচ্ছাকৃতভাবে ডিমারফস গ্রহাণুর সাথে সংঘর্ষ করেছে। ২৪,০০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে চলা ডার্ট আজ ডিমারফসের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে
এই পরীক্ষার মাধ্যমে নাসা কাইন্যাটিক ইম্প্যাক্টর প্রযুক্তির পরীক্ষা করছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে আসা গ্রহাণুগুলি থেকে পৃথিবীকে সুরক্ষিত করা হবে। মূলত, এই গ্রহাণুগুলি পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ স্যাটেলাইট পরিষেবার বড় ক্ষতি করতে পারে। তাই নাসা দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি তৈরির কাজ করছে।
জানা গিয়েছে, নাসার ডার্ট মহাকাশযানটি ডিমারফস গ্রহাণুর কক্ষপথ এবং দিক পরিবর্তন করতে তার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ডিমারফস হল ডিডিমস গ্রহাণু সিস্টেমের একটি অংশ। এমতাবস্থায়, নাসার যানটি এটিকে আঘাত করে অন্য কক্ষপথে ঠেলে দেবে। এদিকে, এই পুরো ঘটনা এবং এর প্রভাব জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ও হাবল টেলিস্কোপ সহ সমস্ত ক্যামেরা এবং টেলিস্কোপ দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ডিমারফস গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৯৬ লক্ষ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। এর নাম গ্রিক শব্দ “ডিডাইমোস”-এর উপর ভিত্তি করে রাখা হয়েছে। যেটির অর্থ হল যমজ। মূলত, এটি ২,৫০০ ফিট বড় গ্রহাণু “ডিডিমস”-এর অংশ। ডিডিমস গ্রহাণুটি ১৯৯৬ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এদিকে, ডিমারফস গ্রহাণুটি প্রায় ৫২৫ ফুট লম্বা। ডিডিমসের চেয়ে সেটি ১.২ কিলোমিটার দূরে প্রদক্ষিণ করছে বলেও জানা গিয়েছে।
নাসার এই ডার্ট মিশনটি শুধুমাত্র একটি উপকরণ নিয়ে গঠিত। এর কাজ হল গ্রহাণুর উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে সেটির ওপর লক্ষ্য রাখা এবং তার দিক পরিবর্তন করা। এই প্রক্রিয়ায়, গ্রহাণুটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ভেঙে গিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। তবে নাসার এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের সফলতা যাচাই করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানা গিয়েছে।