বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার বড়সড় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই সরকার গ্রাহকদের কাছ থেকে জোর করে সার্ভিস চার্জ নেওয়ার বিরুদ্ধে রেস্তোঁরাগুলিকে সতর্ক করেছে। পাশাপাশি, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর একটি সতর্কতাও জারি করেছে। এমতাবস্থায়, রেস্তোরাঁর মালিকরা এই সতর্কবার্তার পরেও সচেতন না হলে তাঁদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
মূলত, রেস্তোরাঁয় গ্রাহকদের কাছ থেকে জোর করে সার্ভিস চার্জ আদায়ের বিষয়টিকে কড়া ভাবেই দেখছে সরকার। এই প্রসঙ্গে উপভোক্তা বিষয়ক বিভাগ আগামী ২ জুন ন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (NRAI)-র সাথে একটি বৈঠক ডেকেছে। সেখানে, জাতীয় উপভোক্তা হেল্পলাইনে অভিযোগ নথিভুক্ত করার পরে, বাধ্যতামূলক সার্ভিস চার্জ আরোপের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
কি বলা হয়েছে চিঠিতে?
এই প্রসঙ্গে উপভোক্তা বিষয়ক সচিব চিঠিতে বলেছেন, গ্রাহকদের এখন বাধ্যতামূলকভাবে সার্ভিস চার্জ দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, রেস্তোরাঁগুলি যথেচ্ছ উচ্চ হারে এই ফি নির্ধারণ করে থাকে। এমনকি, যখন গ্রাহকরা বিলের পরিমাণ থেকে এই ধরনের চার্জ অপসারণের অনুরোধ করেন, তখন তাঁদের বিভ্রান্ত করে এই ধরনের চার্জকে “বৈধ” প্রমাণিত করার চেষ্টাও করা হয়।
আইন কি বলছে?
উপভোক্তা সুরক্ষা আইনের অধীনে এই নির্দেশিকাটি ২০১৭ সালে তৈরি করা হয়েছিল। ওই নির্দেশিকাতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো রেস্তোরাঁ তাদের কোনো গ্রাহককে সার্ভিস চার্জ দেওয়ার বিষয়ে বাধ্য করতে পারবে না। এর ভিত্তিতে যদি কোনো রেস্তোরাঁ কোনো গ্রাহককে রেস্টুরেন্টে প্রবেশে বাধা দেয়, তাহলে তা “রেস্ট্রিক্টেড ট্রেড প্র্যাকটিস” হিসেবে বিবেচিত হবে।
সম্মতি ছাড়া সার্ভিস চার্জ নেওয়া অবৈধ:
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, রেস্টুরেন্ট মালিক যদি গ্রাহকের সম্মতি ছাড়াই সার্ভিস চার্জ নিয়ে থাকেন তবে তা অবশ্যই বেআইনি। কারণ গ্রাহক সার্ভিস চার্জ দিতে কোনোভাবেই বাধ্য নন। যার ফলে তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই রেস্টুরেন্টে সার্ভিস চার্জ দিতে অস্বীকার করতে পারেন।
সার্ভিস চার্জ নির্দেশিকায় কি বলা হয়েছে?
২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা সার্ভিস চার্জ সংক্রান্ত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে, কিছু কিছু হোটেল এবং রেস্তোরাঁ থেকে গ্রাহকদের সম্মতি ছাড়াই “টিপ” বা সার্ভিস চার্জ নেওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। অনেকসময়ে বিলে সার্ভিস চার্জ দেওয়ার পরও গ্রাহকেরা ওয়েটারকে আলাদাভাবে টিপ দেন এই ভেবে যে, বিলের চার্জ হয়ত ট্যাক্সেরই একটি অংশ। এমনকি, অনেক জায়গায় হোটেল-রেস্তোরাঁয় এমনও লেখা আছে যে, গ্রাহকেরা বাধ্যতামূলকভাবে সার্ভিস চার্জ দিতে রাজি না হলে আসবেন না।
পাশাপাশি, একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মেনুকার্ডে খাবারের যে দাম লেখা থাকে, সেই দামের সঙ্গেই সার্ভিস চার্জ সংযুক্ত থাকে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও, টিপ গ্রাহকদের ওপর নির্ভর করে। এমতাবস্থায় বিলে স্পষ্টভাবে লিখতে হবে যে, সার্ভিস চার্জও গ্রাহকের বিবেচনাধীন থাকবে।