পদে বসতেই অসমে NRC নিয়ে কাজ শুরু করলেন হিমন্ত, আবেদন গেল সুপ্রিম কোর্টে

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সরকারে আসার পর ২০১৯ সালে ৩১ মার্চ প্রতিশ্রুতি মত এনআরসি জারি করেছিল বিজেপি সরকার। কিন্তু সম্পূর্ণ ছিলনা এই তালিকা। যার ফলে ভুল এনআরসির কারণে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় মানুষকে। চূড়ান্ত তালিকায় সে সময় স্থান পেয়েছিলেন  ৩ কোটি ১১ লক্ষ ২১ হাজার ৪জন মানুষ। বাদ গিয়েছিলেন ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জন। যাদের মধ্যে ছিলেন অনেক হিন্দুও। এর পরেই তাদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। শুধু তাই নয় শুরু হয় বিপুল প্রতিবাদ প্রতিরোধও। সারা দেশ জুড়ে চলা বিপুল এনআরসি এনপিআর এবং সিএএ বিরোধী আন্দোলনে বড় ভূমিকা রেখেছিল আসামও।

শুধু তাই নয়, এই ভুল এনআরসি পরবর্তী ক্ষেত্রে রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে ভারতীয় জনতা পার্টির। একদিকে যেমন আসামকে উদাহরণ করে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ তেমনি পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন গুলিতেও বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাদের। এমনকি আমাদের এই রাজ্যে একাধিকবার আসামের উদাহরণ টেনে বিজেপিকে ব্যাকফুটে ঠেলার চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল আসামের আমজনতার মধ্যেও। এমনকি বারাক উপত্যাকার হিন্দুরা সুবিচার পায়নি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আসামের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও। আর সেই কারণেই, নির্বাচনী ইশতেহারেও বিজেপি জানিয়েছিল এবার আসামের মানুষ তাদের ক্ষমতায় ফেরালে নতুন করে সঠিক এনআরসি করবেন তারা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আসামে এনআরসি করতে চেয়েছিল কংগ্রেস সরকারও। যদিও তার শেষ পর্যন্ত কার্যকরী হয় বিজেপি আমলে। তবে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দূরে সরিয়ে ফের একবার বিজেপিকে ক্ষমতায় এনেছে আসামের আমজনতা। সর্বানন্দ সোনোয়ালের জায়গায় নতুন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। ক্ষমতায় এসেই এবার এনআরসি সংশোধনের কাজ শুরু করলেন তিনি। আসামের মানুষকে যাতে এর চেয়ে বেশি দুর্দশা ভোগ করতে না হয় সেই লক্ষ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালেন এনআরসি কো-অর্ডিনেটর হিতেশ দেবশর্মা। তিনি জানিয়েছেন, এনআরসি চূড়ান্ত তালিকায় বেশ কিছু মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন ও বংশ তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে দুর্নীতি ধরা পড়েছে। ফলে গোটা প্রক্রিয়াতেই রয়েছে অস্বচ্ছতা।

আবেদনে নিজেদের ভুলের কথা একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছে সরকার। জানানো হয়েছে, “আসামের এনআরসি-এর চুড়ান্ত তালিকাতেও রয়ে গেছে একধিক গলদ। চূড়ান্ত তালিকা এবং সাপলিমেন্টারি তালিকা তৈরি করার পরেও বাদ পরেছে বহু যোগ্য ব্যক্তির নাম। অন্যদিকে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন অনেক অযোগ্য ব্যক্তিও।” এখন আগামী দিনে নতুন এনআরসিতে যোগ্য ব্যক্তিদের দুর্দশা কিছুটা লাঘব হয় কিনা সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে সকলে। তবে অবশ্যই নতুন করে দেশে আর কোনো আন্দোলন কাম্য নয়। আর কাউকে যেন বলতে না হয় আমরা কাগজ দেখাতে চাইনা।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর