মন জিতে নিলেন প্রবাসী চিকিৎসক! দেশের এই হাসপাতালে দান করলেন জীবনের সঞ্চিত ২০ কোটি টাকা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশের একটি অন্যতম সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক (MBBS) হয়েছিলেন তিনি। যদিও, কর্মসূত্রে দেশের বাইরে যেতে হয় তাঁকে। তবে, তিনি ভুলে যাননি দেশকে। এমনকি, বহু বছর প্রবাসে কাটানোর পরেও জন্মভূমির প্ৰতি তাঁর প্রবল আকর্ষণ ছিল। আর সেই কারণেই জীবনের সমস্ত সঞ্চয় বাবদ ২০ কোটি টাকা তিনি হাসিমুখে দান করলেন দেশেরই এক হাসপাতালকে। হ্যাঁ, শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। আর এই ঘটনার নেপথ্যে যিনি রয়েছেন তিনি হলেন ডাঃ উমাদেবী গাভিনি (Umadevi Gavini)।

জানা গিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলার বাসিন্দা উমাদেবী ১৯৬৫ সালে গুন্টুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকেই এমবিবিএস পাশ করেন। পরবর্তীকালে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়ে সেখানেই কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। বর্তমানে আমেরিকায় তিনি একজন ইমিউনোলজিস্ট এবং অ্যাল্যার্জি বিশেষজ্ঞ হিসেবে রোগীদের পরিষেবা দিয়ে আসছেন।

এমতাবস্থায়, গত মাসে আমেরিকার ডালাসে গুন্টুর মেডিক্যাল কলেজ অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন নর্থ আমেরিকা (GMCANA)-র ১৭তম পুনর্মিলন অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাসপাতাল (এমসিএইচ) তৈরির জন্য ডাঃ উমাদেবী গাভিনি তাঁর সারা জীবনের সমস্ত সঞ্চয় বাবদ মোট ২০ কোটি টাকা দান করার ঘোষণা করেন।

এদিকে, গুন্টুর মেডিক্যাল কলেজ অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন নর্থ আমেরিকার তরফে প্রথমে ওই হাসপাতালটি উমাদেবীর নামে করার প্রস্তাব জানানো হলেও তিনি তা সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করে বরং সেটি তাঁর প্রয়াত স্বামী কানুরি রামচন্দ্র রাওয়ের নামাঙ্কিত করার অনুরোধ জানান। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ডাঃ উমার স্বামী, ডাঃ কানুরী রামচন্দ্রও একজন চিকিৎসক ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি প্রয়াত হন। পাশাপাশি, তাঁদের কোনো সন্তান নেই বলেও জানা গিয়েছে।

কি কি থাকবে ওই হাসপাতালে: প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ওই হাসপাতালে মোট পাঁচটি তলা থাকবে। ৫৯৭ শয্যার হাসপাতালটির প্রসূতি ওয়ার্ডে মোট ৩০০ টি শয্যা থাকবে। এছাড়াও, চাইল্ড কেয়ার ইউনিটে ২০০ টি, পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) ২৭ টি, এসআইসিইউতে ৩০ টি এবং নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) ৪০ টি শয্যা থাকবে বলে জানা গিয়েছে।

slide thumb 1665245848 1

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এর আগেও নিজের দেশকে মনে রেখে তথা দেশের মানুষের সুবিধার্থে একাধিক জন বিভিন্ন বড় অঙ্কের দান করেছেন। তবে, বর্তমানে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নিজের সঞ্চিত অর্থ পুরোটাই দান করার মত বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হয়েছেন ডাঃ উমাদেবী গাভিনি। পাশাপাশি, তাঁর এই মহতী সিদ্ধান্তকে কুর্ণিশও জানাচ্ছেন সকলেই।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর