বাংলা হান্ট ডেস্ক : দূর্গা উৎসবে মাতোয়ারা গোটা বাঙালী জাতি।তারা এই পাঁচটি পুজোর দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকে সারা বছর। কিন্তু বাংলা সবসময় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এবং পথ দেখায়, যেমন ‘ওহ কলকাতা’তাহলে জেনে নেওয়া যাক ‘ওহ কলকাতা’ আসলে কি এবং তাদের অভিনব উদ্যোগটিই বা কি?
‘ওহ কলকাতা’ হল একটি সোশ্যাল অরগানাইজেশন। তারা এবার কলকাতার পুজো মণ্ডপগুলিকে সবুজ করে তুলতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা কলকাতার একাধিক বড় বড় পুজো কমিটির হাতে চারাগাছ তুলে দিচ্ছে। ওহ কলকাতার বার্তা হল, ” পরিবেশ বাঁচাতে বৃক্ষরোপণ করুন কারণ দিন দিন যেভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এবং গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে তাতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” তাই পরিবেশকে বাঁচাতে প্রত্যেক পুজো কমিটিকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানালো ওহ কলকাতা।
পাশাপাশি অভিনব বিষয় হল ‘ওহ কলকাতার’ ২ জন ফাউন্ডার, আফতাব আহমেদ ও তাসলিম আলী। ধর্মের ভিত্তিতে তারা দু’জনেই মুসলিম। মুসলিম হয়ে তারা যেভাবে হিন্দুদের পুজোতে তারা এগিয়ে এসেছে তাদেরকে কুর্নিশ জানিয়েছে গোটা হিন্দু ধর্মের মানুষ। তাই তারা সমাজের চোখে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হিন্দু ধর্ম কখনো অন্য ধর্মকে ছোট করে দেখেনা।একাধিকবার দেখা গিয়েছে, হিন্দুরা মুসলিমদের পুজোতে যায় আবার মুসলিমরাও হিন্দুদের পুজোতে আসে।
হিন্দু -মুসলিম- খ্রিস্টান ছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে বিভিন্ন সামাজিক উৎসবে মিলিত ভাবে থাকে। ওহ কলকাতার প্রতিনিধিরা যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ালেন এবং সমাজের জন্য তারা নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তার জন্য সকল পুজো কমিটি তাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ও কলকাতার সদস্য বলেন আমরা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রতিটি পুজো কমিটিকে একাধিক গাছ উপহার দিচ্ছি। তারা গাছ গুলোকে বড় করবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এছাড়া তারা আরও জানিয়েছেন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তারা কয়েক লক্ষ গাছ বিতরণ করবেন। এই সামাজিক বার্তা ফলে তারা আর কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে কিনা সেই দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে কিন্তু এই হিন্দু মুসলিমের যে ভেদাভেদ তা কিন্তু দূরে তারা। এবার সামাজিক বার্তা দিতে চলেছে দুর্গাপুজো কে কেন্দ্র করে। যেভাবে সাজো সাজো রব গড়ে উঠছে কলকাতায় পুজোর জন্য। তার জন্য বিপুল পরিমাণে দূষণ হচ্ছে প্রচুর গাছ কাটা হচ্ছে এবং কংক্রিটের শহরে হারিয়ে যাচ্ছে শহরের ফুসফুস।
ফুসফুসকে ফিরিয়ে আনার জন্য এই অভিনব উদ্যোগ বলে মনে করছে উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটিরা জানিয়েছেন তারা এই অভিনব উদ্যোগ আগে কখনো দেখেনি। এই উদ্যোগ এর ফলে তাদের আরো উৎসাহ বাড়বে।
পরিবেশে প্রতি যে প্রত্যেক মানুষের দায়বদ্ধতা আছে তা তারা বয়ে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ও কলকাতায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই প্রতিটি পুজো কমিটিকে বিনামূল্যে গাছ দেবেন এবং তারা আরো
কিভাবে এই কাজ ত্বরান্বিত করা যায় সেই দিকেও নজর দেবে। শুধু পুজোর সময় তারা গাছ বিতরণ করছে তা নয়, সারা বছরই তারা এই সামাজিক বার্তা দেয়ার জন্য গাছ বিতরণ করবেন এবং গাছের রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। তাদের এই কাজ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এখন দেখার বিষয় এবছর তারা কত গাছ দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে কারণ গাছ আমাদের পরম বন্ধু। ওহ কলকাতার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।