বাংলাহান্ট ডেস্ক : ৭০ বছরের বৃদ্ধ (Old man) আর তার সঙ্গেই ঘর বাঁধছেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধা (Old lady)। ছেলে মেয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় একে অন্যকে বিয়ে (Marriage) করে সংসার পাতলেন একটি কুঁড়েঘরে। বলা বাহুল্য, এ যেন এক অন্যরকম ভালোবাসার (Love affair) নজির। আর দুর্লভ প্রেমের সাক্ষী থাকল উড়িষ্যার (Odisha) মালাকালপাদা ব্লকের গোগুয়া গ্রামের বাসিন্দারা। যদিও মুখে প্রায়শই বলা হয় ভালোবাসার কোনো বয়স নেই, কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে অনেক সময় মানুষ নতুন করে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ানোর সাহস খুব একটা পান না।
কিন্তু বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদেরকে যখন তাঁদের নিজের সন্তান ও পরিবারের সদস্যরাই বোঝা মনে করে, তখন তাঁদের ভালোবাসা ও আত্মীয়তার খোঁজে অনেক সময় নতুন করে ভাবনা চিন্তা করতে হয় বৈকী। জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে উড়িষ্যাতেও ঠিক এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পরিবার থেকে বিতাড়িত দুই বৃদ্ধ বৃদ্ধা একে অপরের সাথে দেখা করে একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেন। যেহেতু তাঁদের সন্তানরা তাঁদের বাড়ি থেকে দূর করে দিয়েছিলো তাই এরপর এই বৃদ্ধ দম্পতি একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং বিয়ে করে নেন।
বলা বাহুল্য, বৃদ্ধ বয়সে তাদের বাবা-মায়ের যত্ন নেওয়া এবং তাদের চাহিদা পূরণ করা তাদের সন্তানদের দায়িত্ব। তবে ভারতে তথা আমাদের সমাজে এখনও এমন সন্তান রয়েছে যারা তাদের বৃদ্ধ বাবা-মাকে বোঝা মনে করে। উড়িষ্যার মালাকালপাদা ব্লকের গোগুয়া গ্রামের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী শক্তিপদ মিশ্রের ক্ষেত্রে এমনটি হয়েছিল। তাঁর সন্তানরা তাঁকে বৃদ্ধ বয়সে নিঃস্ব করে ঘর ছাড়া করে দিয়েছিলো। অন্যদিকে, ৬৫ বছর বয়সী তেজস্বিনী মন্ডলের স্বামী ৪ বছর আগে মারা যান। তারপরে তাঁর ৩ ছেলে তাকে পরিত্যক্ত করে রেখে যায়। জীবিকা নির্বাহের জন্য, তেজস্বিনী মন্ডল গ্রামের বাজারে মাটির হাঁড়ি বিক্রি করতেন, সেই সময়ে তিনি শক্তিপদ মিশ্রের সাথে দেখা হয়।
এই দুই প্রবীণই একে অপরের কাছ থেকে উপলব্ধি করেছিলেন যে সন্তান এবং পরিবার থাকা সত্ত্বেও, বয়সের এই পর্যায়ে তাঁরা একা, যেখানে তাঁদের সাথে কথা বলার বা সময় কাটানোর মতো কোনও সঙ্গী নেই। এমন পরিস্থিতিতে শক্তিপদ এবং তেজস্বিনী একে অপরের সাথে কথা বলতে শুরু করেন, এরপর তারা বন্ধু হন এবং এই বন্ধুত্ব প্রেমে পরিণত হয়। এরপর শক্তিপদ তেজস্বিনীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন, যা তেজস্বিনী খুশি হয়ে স্বীকার করে নেন। এইভাবে, গত ৫ই ডিসেম্বর শক্তিপদ এবং তেজস্বিনী স্থানীয় একটি মন্দিরে গিয়ে একে অপরকে বিয়ে করেন, তারপরে তাঁরা দুজনে একটি ছোট কুঁড়েঘরে একসাথে থাকেন।