‘ইয়ে পাগলি হ‍্যায়, বাঁচাও!’, সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়কে তাড়া করেছিলেন উত্তম-জায়া গৌরী দেবী

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্র জগতের স্বর্ণযুগের দুই মহারথী উত্তম কুমার (Uttam Kumar) এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায় (Soumitra Chatterjee)। প্রথম জন ‘বদ্দা’ হলে দ্বিতীয় জনকে ‘মেজদা’ বলে আশা করি সৌমিত্র অনুরাগীরা মনক্ষুন্ন হবেন না। আসলে এই দুই তারকার মধ‍্যেও কিন্তু এমনি দাদা-ভাইয়ের মতোই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল‌। সেই সম্পর্ক কখনো রৌদ্রোজ্জ্বল থেকেছে, কখনো আবার মেঘ ঘনিয়েছে। কিন্তু নিজের এই সহ অভিনেতাকে বরাবর আপন ভাইয়ের মতোই ভালবেসেছেন ‘মহানায়ক’। তেমনি উত্তমকে দাদার সম্মান দিয়েছেন সৌমিত্র।

ইলিশ-চিংড়ি থেকে ঘটি-বাঙাল বা ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান, বাঙালি বরাব‍র দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। তেমনি উত্তম-সৌমিত্র নিয়েও দ্বন্দ্ব ছিল, আছে আর থাকবেও। কিন্তু এই দুজনের মধ‍্যে ব‍্যক্তিগত রসায়ন কেমন ছিল? একাধিক সংবাদ মাধ‍্যম সূত্রে জানা যায়, দুজনের মধ‍্যে দাদা-ভাইয়ের খুনসুটির সম্পর্ক থাকলেও সৌমিত্রকে নাকি একটু সমঝেই চলতেন।

uttam soumitra
অনেকেই জেনে থাকবেন, ‘মহানায়ক’ এর সামান‍্য উচ্চারণগত সমস‍্যা ছিল‌। শোনা যায়, এ নিয়ে তিনি নিজেও মাঝেমাঝে বিব্রত হতেন। অন‍্যদিকে সৌমিত্রর উচ্চারণ জলের মতো পরিস্কার। একবার ‘দেবদাস’ ছবির সংলাপ রেকর্ড করতে গিয়ে এমনি সমস‍্যায় পড়েছিলেন উত্তম কুমার।

বড় সংলাপে উচ্চারণ নিখুঁত হয় না কিছুতেই। শেষে রেকর্ডিং রুমে উপস্থিত সৌমিত্রকে নাকি ঘর থেকে বের করে দেন উত্তম কুমার। কেন? কারণ ‘পুলু’র উচ্চারণ খুব ভাল তাই! সৌমিত্র বেরিয়েও গিয়েছিলেন। আরেক বার সবার সামনেই নাকি সৌমিত্রর উদ্দেশে মহানায়ক বলে উঠেছিলেন, তিনি তো বড় দাদা। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা উচিত ছোট ভাইয়ের। একসঙ্গে কাজ করার সময়ে এই বড় দাদার সঙ্গে কোনো রকম মান অভিমান হলেও তাই তা মনে পুষে রাখেননি সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়।

শুধু উত্তম কুমার নন, ‘টুনটুনি বৌদি’র সঙ্গেও নাকি খুব ভাল সম্পর্ক ছিল তাঁর। হ‍্যাঁ, মহানায়কের স্ত্রী গৌরী দেবীকে ‘টুনটুনি বৌদি’ বলে ডাকতেন সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়। শোনা যায়, একবার তাস খেলার সময়ে দেওরের ‘চুরি’ ধরতে পেরে সৌমিত্রকে তাড়া করেছিলেন গৌরী দেবী। অভিনেতা ছুটছেন আগে আগে, পেছন পেছন গৌরী দেবী। শেষে সৌমিত্র নাকি চিৎকার করে বলেই বসেছিলেন, ‘আরে ইয়ে পাগলি হ‍্যায়, বাঁচাও!’


Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর