বাংলা হান্ট ডেস্ক : টাকা দিলেই মিলবে পূর্ণ মন্ত্রীত্ব, সেই সাথে সাত তাড়াতাড়ি মিলবে পছন্দের দফতরও। এমনই ফোন কলস রিসিভ করতে করতে হয়রান হয়ে গেছিলেন স্বয়ং তৃণমূল (Trinamool Congress) বিধায়ক। এমনকি একবার এই ফাঁদে পা দিয়ে ৮৬ হাজার টাকা খুইয়েও বসেছেন তিনি। দুস্কৃতিদের ফাঁদ শাখা প্রশাখা ছড়াতেই সন্দেহ দানা বাঁধে বিধায়কের মনে। এরপরেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)।
বিধায়ক জানিয়েছেন, প্রথমে তাকে আইপ্যাক সংস্থার কথা বলে প্রতারণার চেষ্টা করেন ওই যুবক। অনেকেই হয়ত জানেন যে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাককে বাংলায় নিয়ে আসে তৃণমূল। পরবর্তী সময়ে প্রশান্ত কিশোর তার কোম্পানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেও আইপ্যাকের সাথে তৃণমূলের সম্পর্ক আজও অটুট। এমতাবস্থায়, এই আইপ্যাকের নাম নিয়েই বিধায়ককে লুট করার চেষ্টা করে ঐ অভিযুক্ত যুবক।
সূত্রের খবর, প্রথমটা অল্প টাকা চাওয়া হয় বিধায়ক হুমায়ুনের কাছে। তবে পরে দফায় দফায় বাড়তে থাকে টাকার অঙ্ক। এভাবেই প্রায় ৮৬ হাজার টাকা দিয়েও ফেলেছেন তিনি। তবে টাকার অঙ্ক যখন ১০ লক্ষ টাকায় পৌঁছে যায় তখনই সন্দেহ তৈরি হয় বিধায়কের মনে। শনিবার সকালে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। পুলিশি জেরায় তিনি জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপ কল আস্তে থাকে তার কাছে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং আইপ্যাকের প্রতীক জৈনের নাম করে কথাবার্তা শুরু করে ঐ যুবক।
বিধায়ককে বলা হয়, তাকে পূর্ণ মন্ত্রিত্ব এবং গুরুত্বপূর্ণ দফতর পাইয়ে দেবে বলে দাবি করে ঐ যুবক। এমনকি আসন্ন নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ পদ অবধি পাইয়ে দেওয়া হবে বলে দাবি করেন তিনি। যতক্ষণে তিনি ফাঁদ বুঝতে পারেন ততক্ষণে ৮৬ হাজার টাকা দিয়েও ফেলেছেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি যোগাযোগ করেন কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে। এরপরেই ওই নম্বর ব্লক করে দেন বিধায়ক হুমায়ুন। তবে তাতেও থেমে থাকেনি দুস্কৃতিরা। গত ২২ তারিখ থেকে লাগাতার ফোন আসতে থাকে। এরপরই তিনি পৌঁছান শক্তিপুর থানায়।
অভিযোগ মেলা মাত্রই শুরু হয় তদন্ত। ফোন নম্বর ট্র্যাক করে জানা যায়, নম্বরটি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত পুলিশ জেলার মধ্যমগ্রামের। ঐ নম্বরের সূত্র ধরেই অঞ্জন কুমার নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও বিধায়ক জানিয়েছেন, তিনি ঐ ব্যক্তিকে রঞ্জন সরকার নামে চিনতেন। পুলিশি জেরায় নিজের এই অপরাধ স্বীকারও করে নিয়েছেন তিনি। কেন এই কাজ করেছেন জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্ত জানিয়েছেন, তার টাকার দরকার পড়েছিল বলেই নাকি তিনি এই কাজ করেছেন।