ফুরিয়ে এসেছে তেল, যেকোনও মুহূর্তেই নামতে পারে আকাল! শাহবাজকে হুঁশিয়ারি তেল সংস্থার

বাংলাহান্ট ডেস্ক: চূড়ান্ত খারাপ অবস্থা প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের (Pakistan)। আর মাত্র কয়েকদিন, তারপরই দেশে একেবারে ফুরিয়ে যাবে তেল। এমনই জানিয়ে দিল পাকিস্তানের তেল কোম্পানিগুলি। তারা জানিয়েছে, দেশের বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার এবং পাক রুপির মূল্য একেবারে তলানিতে চলে যাওয়ায় তারা তেল আমদানি করতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে (Shahbaz Sharif) তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আর মাত্র কয়েকদিন পরেই তারা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে গভীরতর সঙ্কটে পড়বে পাকিস্তান।

ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) থেকে সাহায্যের অপেক্ষা করছে জিন্নার দেশ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বার খুব সহজে তারা সাহায্য পাবে না। অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, তেল কোম্পানিগুলি বন্ধ হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণরূপে ধসে যাবে। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জ্বালানি সঙ্কটের (Oil Crisis) মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। IMF-এর শর্ত অনুযায়ী, ডলার ক্যাপ তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিল শাহবাজ সরকার। এর ফলে হুরমুরিয়ে পতন হয় পাক রুপির।

pakistan oil crisis

শেষ অবধি এক ডলারের তুলনায় পাক রুপির মূল্য হয় ২৭৬.৫৮। এর মধ্যেই পাকিস্তানের তেল ও গ্যাস নিয়ন্ত্রক সংস্থা (OGRA) শক্তি মন্ত্রককে একটি চিঠি লিখেছে। তেল কোম্পানি উপদেষ্টা পরিষদ (OCAC) জানিয়েছে, পাক রুপির পতনের ফলে জ্বালানি শিল্পের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। পাক শক্তি মন্ত্রককে চিঠির মাধ্যমে এমনই জানিয়েছে তেল ও গ্যাস নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তাদের লেটার অফ ক্রেডিটগুলি নতুন দর অনুযায়ী ঠিক করা হবে বলে আশা তাদের। 

কিন্তু পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার ক্রমশ কমছে। ফলে লেটার অফ ক্রেডিটের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে শাহবাজ সরকার। ২৭ জানুয়ারির হিসেব অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে আর মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার মজুত রয়েছে। এই মজুতে আর মাত্র ১৮ দিন দেশ চালাতে পারবে সরকার। শুধু তাই নয়, পাক রুপির পতনের ফলে আমদানিকৃত সামগ্রীর মূল্য আকাশছোঁয়া হচ্ছে। বিদেশ থেকে একটি বড় পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করে পাকিস্তান। এমনকী, বার্ষিক বিদ্যুতের চাহিদাও তারা আমদানিকৃত জৈব গ্যাসের মাধ্যমে মেটায়।

pak petrol pump

তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ব বাজারে দাম বেড়েছে জ্বালানির। সম্প্রতি দেশে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ৩৫ শতাংশ করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এর ফলে বর্তমানে সেখানে পেট্রোল ২৫০ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশের একাধিক জায়গায় পেট্রোল নেই। ফলে আগামী দিনগুলি আরও কষ্টকর হতে চলেছে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। এর মধ্যে IMF-এর শর্তের কটাক্ষ করেছেন শাহবাজ শরিফ।

তিনি জানিয়েছেন, IMF যে শর্তগুলি দিয়েছে তা অভাবনীয়। কিন্তু বাঁচতে গেলে সেই শর্ত মানতেই হবে পাকিস্তানকে। মঙ্গলবার IMF-এর একটি প্রতিনিধি দল পাকিস্তানে পৌঁছেছে। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি তারা সিদ্ধান্ত নেবে আদৌ পাকিস্তানকে বেল আউট প্যাকেজ দেওয়া হবে কি না। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সাল থেকেই IMF-এর থেকে আর্থিক সাহায্য চাইছে পাকিস্তান। এখনও অবধি ২৩ বার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের দারস্থ হয়েছে তারা। এর মধ্যে ২২ বারই তাদের সাহায্য করেছে IMF।

Avatar
Subhraroop

সম্পর্কিত খবর