ক্ষতিগ্রস্ত ৩ কোটিরও বেশি মানুষ! প্রাণ হারিয়েছেন ১৩০০ জন, ভয়াবহ বন্যায় অসহায় পাকিস্তান

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রবল বন্যায় রীতিমতো বিধ্বস্ত পাকিস্তান (Pakistan)। একনাগাড়ে চলা বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে সেখানে। যদিও, বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার কোনো আশাও দেখা যাচ্ছে না। কারণ, এখনও তুমুল বৃষ্টি চলায় নদীগুলির জলস্তর বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এদিকে, ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত ১ হাজার ৩১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মানুষ।

শুধু তাই নয়, বিধ্বংসী বন্যার ফলে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দেশের প্রায় ৩ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ। এমতাবস্থায়, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে অবিলম্বে ৬০ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization, WHO)। ইতিমধ্যেই “WHO”-র পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের ডিরেক্টর আহমেদ আল মান্ধারি একটি বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে জানিয়েছেন, “ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে মানবিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে পাকিস্তানে। এমতাবস্থায়, দেশের নাগরিকদের জন্য প্রার্থনা করছি আমরা। আমাদের কর্মীরা ইতিমধ্যেই কাজে নেমে পড়েছেন। পাশাপাশি, সহযোগী দেশগুলিও সাহায্যে এগিয়ে আসছে।’’

এছাড়াও WHO জানিয়েছে, বন্যার কারণে ইতিমধ্যেই ওই দেশের প্রায় ১,৪৬০ টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র জলমগ্ন হয়ে পড়ায় আপাতত পরিষেবা প্রদান বন্ধ রয়েছে। যদিও, যে কটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বর্তমানে চালু রয়েছে সেগুলিতে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র এবং সরঞ্জাম পৌঁছচ্ছে না। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। এছাড়াও, বন্যার ফলে প্রায় ৬ লক্ষ ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘর ছেড়েছেন পাকিস্তানে।

এমতাবস্থায়, ক্রমশ বাড়ছে একাধিক রোগের প্রাদুর্ভাব। একটানা বন্যার জল দাঁড়িয়ে থাকার কারণে টাইফয়েড, লেশম্যানিয়াসিস, ডায়েরিয়ার মত রোগের প্রকোপ বাড়ছে সেখানে। পাশাপাশি, চিন্তা বাড়াচ্ছে ম্যালেরিয়াও। কয়েক হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। টাইফয়েড রোগীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে হু হু করে। এছাড়াও, বন্যা দুর্গতদের ত্বকের সংক্রমণের পাশাপাশি শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ এবং চোখের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। যার ফলে বন্যা কবলিত এলাকায় বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

2246446 479714145

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সোমবার সিন্ধ প্রদেশের কাম্বার-শাহদাদকোটে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান। সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ক্ষতিপূরণের পরিমান আড়াই গুণ বাড়ানো হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গত শনিবার থেকে সিন্ধ প্রদেশের মাঞ্ছার লেকের জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়ে সমতলের অংশকে প্লাবিত করেছে। পাশাপাশি, এর ফলে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। এছাড়াও, বিপদের মুখে রয়েছে সংলগ্ন জাফরাবাদ, আরাজি, চান্না, বুবাক এবং ওয়াহুর মত এলাকাগুলি।

ad

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর