বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পর পাকিস্তানের (Pakistan) সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ঘিরে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত। “অপারেশন সিঁদুর”-এর পরও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ানো এই সেনানায়ককে এবার আরও ক্ষমতাশালী করতে পাকিস্তান সরকার সংবিধান সংশোধন করল। দেশের ইতিহাসে প্রথমবার তৈরি করা হল নতুন পদ— চিফ অব ডিফেন্স ফোর্স (Chief of Defence Force)। সংবিধানের ২৪৩ ধারায় পরিবর্তন এনে শনিবার, ৯ নভেম্বর পাকিস্তানের সংসদে পাস হয়েছে ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল। এই ধারাটিই মূলত দেশের সেনা কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে।
আরও ক্ষমতাশালী পদে পাকিস্তানের (Pakistan) সেনাপ্রধান:
নতুন আইনে বলা হয়েছে, পাক (Pakistan) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পরামর্শে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্স— দুই পদে নিয়োগ করবেন। তবে একই ব্যক্তি এই দুটি পদ সামলাবেন। অর্থাৎ, বর্তমানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরই হবেন দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্স। এর ফলে পাকিস্তানের তিন বাহিনী— স্থল, নৌ ও বায়ু—-এর মধ্যে আরও নিবিড় সমন্বয় তৈরি করার কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:অনলাইনে গোল্ড কেনার আগে হয়ে যান সাবধান! বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল SEBI
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানে (Pakistan) এই পদ আসলে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করার এক কৌশল। কারণ চিফ অব আর্মি স্টাফের হাতেই থাকবে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সব ধরনের কৌশলগত সিদ্ধান্তের নিয়ন্ত্রণ। পাশাপাশি, নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, সরকার এখন থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ফিল্ড মার্শাল, এয়ার মার্শাল ও অ্যাডমিরাল পদে প্রোমোশন দিতে পারবে। ফিল্ড মার্শাল পদধারীরা আজীবন এই র্যাঙ্কের মর্যাদা ও সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, নতুন কোনও নিয়োগ আপাতত করা হবে না। আসিম মুনিরই বর্তমান চিফ অব ডিফেন্স ফোর্স থাকবেন, এবং তাঁর মেয়াদকালে সংসদ এই পদ বিলোপ করতে পারবে না। তবে তাঁর অবসর-পরবর্তী সময়ে পদটি বাতিলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তিনি।পাকিস্তানের (Pakistan) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পরই এই পদ তৈরির চিন্তাভাবনা শুরু হয়। বিশেষ করে ভারতের “অপারেশন সিঁদুর” এবং তারপরে ১০ মে পর্যন্ত চলা সীমান্ত উত্তেজনার পর পাকিস্তান প্রশাসন উপলব্ধি করে যে, আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে তিন বাহিনীর মধ্যে আরও সমন্বয় প্রয়োজন। সেই কারণেই সেনা প্রধানের পদোন্নতি ঘটিয়ে ফিল্ড মার্শাল মর্যাদা দেওয়া হয় আসিম মুনিরকে।

আরও পড়ুন:SIR শেষে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ বাদ পড়লে কী করবেন? জানুন কমিশনের নির্দেশ
চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর থেকেই এই নতুন পদ কার্যকর হতে চলেছে। ফলে পাকিস্তানের (Pakistan) সেনা কাঠামোয় এবার আসছে বড়সড় পরিবর্তন। বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে আসিম মুনির কার্যত পাকিস্তানের সর্বময় ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত হতে চলেছেন— একদিকে দেশের প্রতিরক্ষার নেতৃত্ব, অন্যদিকে প্রশাসনিক প্রভাব— দুই-ই একসঙ্গে হাতে রাখবেন তিনি। অনেকের আশঙ্কা, এই পদক্ষেপে পাকিস্তানে সামরিক প্রভাব আরও গভীর হবে, আর গণতন্ত্র আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।
এক কথায় বলা যায়, ভারতের সঙ্গে সংঘাতের পর পাকিস্তান (Pakistan) এখন প্রতিরক্ষা কাঠামো মজবুত করার নামে আসলে সেনার রাজনৈতিক প্রভাব আরও দৃঢ় করছে— আর সেই কেন্দ্রবিন্দুতেই রয়েছেন জেনারেল আসিম মুনির।












