ব্রহ্মসের আঘাতে গুঁড়িয়ে যাওয়া ঘাঁটি ফের গড়ছে পাকিস্তান! নতুন কোন ছক কষছে পড়শি দেশ?

Updated on:

Updated on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাঁওতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারতের প্রতিশোধমূলক অভিযানে কেঁপে উঠেছিল পাকিস্তান (Pakistan) ও পাক অধিকৃত কাশ্মীর। ভারতীয় সেনার (Indian Army) পরিচালিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) -এ ধ্বংস হয় পাকিস্তান এবং পিওকে-র অন্তত ৯টি জঙ্গিঘাঁটি। এখনও পর্যন্ত সেই অভিযানের একাধিক তথ্য সামনে এসেছে। তবে সম্প্রতি নতুন এক তথ্য জানা যায়, পাকিস্তান, ধ্বংস হয়ে যাওয়া ঘাঁটিগুলিকে ফের পুনর্গঠন করতে শুরু করেছে। প্রকাশিত উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে, নুর খান বিমানঘাঁটিতে পুরোদমে নতুন করে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নুর খান পাকিস্তান বিমানবাহিনীর অন্যতম কৌশলগত ঘাঁটি। সেখানেই রাখা থাকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম।

উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা পাকিস্তানের (Pakistan)

গত ১০ মে ভারতীয় বিমানবাহিনী (Indian Air force) সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় এবং একটি কমপ্লেক্সে থাকা দুটি বিশেষ ট্রাক ধ্বংস করে দেয়। ধারণা করা হয়, এই ট্রাকগুলি ড্রোন পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত হত। হামলার জন্য কোন  ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তা নিয়ে সরকারিভাবে কিছু জানানো না হলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ব্রাহ্মস ও স্ক্যালপ ক্ষেপণাস্ত্র দু’টিই ব্যবহার করা হয়। ব্রাহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার সু-৩০ যুদ্ধবিমান থেকে এবং স্ক্যালপ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপিত হয়েছিল রাফাল থেকে। হামলার আগে উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছিল দুটি ট্রাক্টর-ট্রেলার কমপ্লেক্সে দাঁড়িয়ে আছে। ১০ মে’র ছবিতে স্পষ্ট হয়, হামলায় ট্রাক দুটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আশেপাশের ভবনগুলিতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১৭ মে’র মধ্যে জায়গাটি পরিষ্কার করা হয় এবং সম্প্রতি ৩ সেপ্টেম্বরের ছবিতে দেখা যায়, সেখানে নতুন করে প্রাচীর তোলা হচ্ছে ও পুনর্গঠন শুরু হয়েছে। ভূ-গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ ডেমিয়েন সাইমন জানিয়েছেন, ভারতের হামলার পর পাকিস্তান (Pakistan) ফের নুর খান বিমানঘাঁটি গড়ে তুলতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন:- নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে একাধিক নির্দেশিকা জারি, কী কী বলা আছে নির্দেশিকায়? জানুন

এই বিমানঘাঁটি পাকিস্তান (Pakistan) সেনাবাহিনীর সদর দফতরের কাছেই অবস্থিত এবং এটি সামরিক কার্যক্রমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকেই পাকিস্তান সায়াব এরিআই নজরদারি বিমান, সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং আইএল-৭৮ রিফুয়েলিং প্লেন পরিচালনা করে। ভারতীয় সেনার হামলায় লক্ষ্যবস্তু ছিল কৌশলগত এবং প্রতীকী—যা পাকিস্তানের সামরিক মনোবলে বড় আঘাত হানে।

প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পেহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত প্রতিশোধমূলক আক্রমণ চালায়। সেনার দাবি, সর্বাধিক ২৩ মিনিটের মধ্যেই পাকিস্তানকে মাটিতে নামিয়ে আনে ভারতীয় বাহিনী। বায়ুসেনার উপপ্রধান এয়ার মার্শাল নর্মদেশ্বর তিওয়ারি জানান, অভিযানে মোট ৫০টিরও কম অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল এবং মাত্র ৯টি নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছিল। দিল্লি থেকে সেনাকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল—প্রতিশোধ মনে রাখার মতো হতে হবে, শত্রুপক্ষ যেন কড়া বার্তা পায় এবং প্রয়োজনে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে যাওয়ারও প্রস্তুতি রাখতে হবে।

Pakistan army rebuilding Noor Khan Airways

আরও পড়ুন:-সোনার বাজারে নতুন আপডেট, ১ লাখ টাকার গয়নায় কত GST লাগবে জানুন

৭ মে ভোরে ভারতের প্রথম হামলার পর টানা ৮, ৯ ও ১০ মে পাকিস্তান (Pakistan) পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করে। তবে ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা তার জবাবে একাধিক পাক সেনা ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়। শেষ পর্যন্ত চার দিনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর ১০ মে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে সর্বশেষ উপগ্রহ চিত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে, পাকিস্তান ফের ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের কৌশলগত ঘাঁটিগুলি পুনর্গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে নতুন উত্তেজনার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।