বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাম মন্দিরে ধ্বজা উত্তোলন নিয়ে পাকিস্তানের সমালোচনার যোগ্য জবাব দিল ভারত (India)। অযোধ্যায় রামমন্দিরের চূড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ধর্মধ্বজ’ উত্তোলন ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন কূটনৈতিক তরজা। মঙ্গলবারের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের পরই ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দাগে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। তাঁদের অভিযোগ, এই কর্মসূচি ‘ইসলামফোবিয়া’-কে উস্কে দেয় এবং সংখ্যালঘুদের ঐতিহ্যকে ‘অপবিত্র’ করে। পাশাপাশি ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রসঙ্গ টেনে ভারত সরকারের ভূমিকারও সমালোচনা করে ইসলামাবাদ। আন্তর্জাতিক মহলেও এই বিবৃতি ঘিরে নানা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।
রামমন্দিরে ধ্বজা উত্তোলন নিয়ে পাকিস্তানের সমালোচনার যোগ্য জবাব ভারতের (India):
বুধবার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারত (India)। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, পাকিস্তানের মতো একটি দেশ, যেখানে সংখ্যালঘুদের উপর নিত্যদিন দমন-পীড়ন, অত্যাচার, জোরপূর্বক ধর্মান্তরণ এবং নৃশংসতা ঘটে, তাদের ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করার নৈতিক অধিকার নেই। তিনি বলেন, “ধর্মান্ধ, মৌলবাদী রাষ্ট্র পাকিস্তানের অন্যকে জ্ঞান দেওয়া একেবারেই মানায় না।” তাঁর কথায়, ভারত তার সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকেই ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্য রক্ষা করে চলেছে।
রামমন্দিরের চূড়ায় ‘ধর্মধ্বজ’ উত্তোলন নিয়ে পাকিস্তানের যেসব অভিযোগ, সেগুলিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে ভারত (India)। জয়সওয়াল স্পষ্ট জানান, অযোধ্যা মন্দির নির্মাণ ও তার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ ভারতের বিচারব্যবস্থা ও সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রক্রিয়া নিয়ে পাকিস্তানের অযথা মন্তব্য করা আসলে তাদের ব্যর্থতা আড়াল করার কৌশল বলেই নয়াদিল্লির মত। তিনি আরও বলেন, “যে রাষ্ট্র সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তাদের উচিত নিজেদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড নিয়ে আত্মসমালোচনা করা।”
মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। রামমন্দিরের শীর্ষে ধর্মধ্বজ উত্তোলনকে মোদি “ভারতের (India) আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক” বলে উল্লেখ করেন। এই অনুষ্ঠান ঘিরে বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও দর্শনার্থী অযোধ্যায় ভিড় জমালে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

ভারত (India) ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিষয়কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা রয়ে এসেছে। রামমন্দির ইস্যুতে আবারও সেই উত্তপ্ত পরিবেশই সামনে এল বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। তবে নয়াদিল্লির স্পষ্ট বার্তা—ভারতের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা বিচারব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করার আগে পাকিস্তানের উচিত নিজের অভ্যন্তরীণ ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া।












