বাংলাহান্ট ডেস্ক: আর্থিক সঙ্কট থেকে মুক্তির আশায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) কাছে হাত পেতেছে পাকিস্তান (Pakistan)। যদিও এ বার তাদের আর সাহায্য করতে রাজি নয় আইএমএফ। সম্প্রতি পাকিস্তানে এসেছিল আইএমএফ-এর একটি প্রতিনিধি দল। টানা ১০ দিন ধরে বৈঠক করে সব কিছু খতিয়ে দেখছিলেন দলের সদস্যরা। কিন্তু আলোচনা শেষে পাকিস্তানের আবেদন খারিজ করে দেয় আইএমএফ-এর ওই প্রতিনিধি দল।
কিন্তু এই প্রথম নয়, এর আগে বহু বার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে হাত পেতেছে পাকিস্তান। তথ্য অনুযায়ী, আইএমএফ-এর কাছে মোট ২৩ বার ঋণ চেয়েছে জিন্নার দেশ। ঋণ চাওয়ার নিরিখে পাকিস্তানের পরেই রয়েছে আর্জেন্টিনা। তারা মোট ২১ বার ঋণ চেয়েছে। সে দিন থেকে অনেকটাই নীচের দিকে রয়েছে ভারত। মাত্র ৭ বার আইএমএফ-এর দারস্থ হতে হয়েছে তাদের।
১৯৯১ সালে নরসিমহা রাও (Narsimha Rao) সরকারকেই শেষ বারের মতো আইএমএফ-এর দারস্থ হতে হয়েছিল। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর মুর্তাজা সঈদ তীব্র কটাক্ষ করেছেন পাকিস্তানের শাসকদের। তিনি বলেছেন, ৭৫ বছরে ২৩ বার বিশ্বের কাছে হাত পাতা কোনও ভাবেই দেশ চালানোর সঠিক উপায় হতে পারে না। তিনি আরও জানান, কোনও দেশের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার শেষ হলে তবেই সেটি আইএমএফ-এর কাছে যায়। বিদেশি ঋণ শোধ করতে ও আমদানির খরচ জোগাতে এই মুদ্রার ব্যবহার করা হয়।
একটি দেশ মূলত দু’ভাবে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার বাড়াতে পারে। প্রথমত কারেন্ট অ্যাকাউন্ট সারপ্লাস (Current Account Surplus) চালাতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো অর্থ এবং রফতানি আমদানির চেয়ে বেশি হয়। দ্বিতীয়ত, যদি একটি দেশ কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ঘাটতি (Current Account Deficit) চালায়। এ ক্ষেত্রে অন্য দেশ থেকে ঋণ নিয়ে নিজেদের ঘাটতি মেটাতে পারে। একইসঙ্গে বাড়াতে পারে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার। এশিয়ার বিভিন্ন বড় অর্থনীতিই কারেন্ট অ্যাকাউন্ট সারপ্লাস চালিয়েছে।
কিন্তু পাকিস্তান ঠিক উল্টোটা করেছে। বর্তমানে পাকিস্তানের কারেন্ট অ্যাকাউন্টে বিপুল ঘাটতি রয়েছে। যেমন ২০১৭-১৯ এবং ২০২২-এ পাকিস্তানের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ঘাটতি তাদের জিডিপি-র ৩ শতাংশেরও বেশি ছিল। এমন অবস্থায় পাকিস্তান বার বার হাত পেতেছে আইএমএফ-এর দরবারে। পাকিস্তানের এমন অবস্থা হওয়ার কারণ তাদের রফতানি খুব দুর্বল। দেশের মোট আয়ের ক্ষেত্রে মাত্র ১০ শতাংশ ভাগ রয়েছে রফতানির। অন্যান্য দেশে এই ভাগ অনেক বেশি হয়। যেমন জিডিপি-র ২০ থেকে ৩০ শতাংশ।