ভারত-চিন-রাশিয়ার বন্ধুত্বেই ভীত শরিফ? SCO সম্মেলনে সুর নরম করে জানালেন “আমরা শান্তপ্রিয়”

Published on:

Published on:

Pakistan is a peace loving country says Sharif at the SCO Summit

বাংলাহান্ট ডেস্ক:-  এ যেন ‘ভূতের মুখে রাম নাম’পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দাবি পাকিস্তান (Pakistan) ‘শান্তিপ্রিয় দেশ’। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) উপস্থিতিতেই প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতি শান্তি, সৌহার্দ্য এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা দিলেন তিনি। তবে কেন হঠাৎ মোদির সামনে সুর নরম করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত–চিন–রাশিয়ার ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হওয়া এবং নতুন আঞ্চলিক অক্ষ গড়ে ওঠা পাকিস্তানের জন্য কূটনৈতিক চাপ তৈরি করেছে। তাই আপাতত নরম বার্তা দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন শাহবাজ শরিফ।

‘শান্তির প্রতীক’ পাকিস্তান (Pakistan)

এসসিও সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাহবাজ (Shehbaz Sharif) বলেন, পাকিস্তান সর্বদাই বহুত্ববাদ, আলোচনা এবং কূটনৈতিক শক্তির উপর আস্থা রাখে। একতরফা পদক্ষেপকে সমর্থন করে না ইসলামাবাদ। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতাকে সম্মান করার পাশাপাশি এসসিও সদস্যভুক্ত প্রতিটি দেশের সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তুলতে পাকিস্তান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে যে অশান্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এদিনই সিন্ধু জলচুক্তির প্রসঙ্গও টানেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, এসসিও সদস্যদের মধ্যে জলসম্পদের সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন বণ্টন নিশ্চিত করা গেলে সংস্থার কাজ আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর হবে।

আরও পড়ুন:- সেপ্টেম্বরের শুরুতেই মিলল সুসংবাদ! গ্রাহকদের স্বস্তি দিতে বড় সিদ্ধান্ত PNB ও ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার

উল্লেখযোগ্যভাবে, পহেলগাঁও সন্ত্রাস হামলার পর ভারত সিন্ধু জলচুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। তার পরপরই ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারতীয় সেনা, যেখানে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, নিকেশ হয় শতাধিক জঙ্গি। পরে পাকিস্তানের অনুরোধে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হলেও নয়াদিল্লি সিন্ধু জলচুক্তি পুনর্বহালের দাবি মানেনি। ইসলামাবাদ একাধিকবার এই বিষয়ে আর্জি জানালেও ভারতের অবস্থান অপরিবর্তিত থেকেছে। সেই প্রেক্ষিতেই শাহবাজের সিন্ধু জল প্রসঙ্গ তোলার কূটনৈতিক তাৎপর্য বিশেষজ্ঞদের নজর এড়ায়নি।

অন্যদিকে, এসসিও সম্মেলনের মঞ্চ থেকে পহেলগাঁও হামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এই হামলা মানবতা ও সভ্যতার প্রতি একটি চরম চ্যালেঞ্জ। তাঁর প্রশ্ন, কিছু দেশ যখন প্রকাশ্যে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে, তখন তা আন্তর্জাতিক সমাজের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য? মোদির মতে, সন্ত্রাসবাদকে একযোগে প্রতিহত করা এখন প্রতিটি দায়িত্বশীল দেশের কর্তব্য। নাম না করেই পাকিস্তানকে (Pakistan) বার্তা দেন মোদী।

Pakistan is a peace loving country says Sharif at the SCO Summit

আরও পড়ুন:- অগাস্টে বিপুল GST আদায়! ফুলেফেঁপে উঠল সরকারের কোষাগার, চমকে দেবে পরিসংখ্যান

এসসিও সম্মেলনের এই দ্বিপাক্ষিক বার্তালাপে একদিকে পাকিস্তান (Pakistan) শান্তি ও সহযোগিতার সুর তুলেছে, অন্যদিকে ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান পুনরায় স্পষ্ট করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের মতে, ভারত–চিন–রাশিয়ার বাড়তে থাকা ঘনিষ্ঠতা এবং পাকিস্তানের ক্রমশ বাড়তে থাকা কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতাই শাহবাজ শরিফকে বাধ্য করছে শান্তিপ্রিয়তার সুরে কথা বলতে। তবে বাস্তবে ইসলামাবাদ কতটা সেই পথে হাঁটবে, সেটাই এখন দেখার।