বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ, এমন একটা কথা বরাবরই প্রচলিত রয়েছে বাংলায়। এবার কার্যত এমনই হালত হল পাকিস্তানের। ভারতকে শিক্ষা দিতে গিয়ে নিজেরাই বিপাকে পড়ল ইমরান খানের দেশ। পাকিস্তানে রীতিমতো এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মূল্যবৃদ্ধি। রোজ এই মূল্যবৃদ্ধির জেরে এখন রীতিমতো নাজেহাল সমস্ত দেশের নাগরিকরা। মূল্যবৃদ্ধি এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে ‘এক কাপ চা’ খাওয়াও এখন রীতিমতো বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের সাথে রাজনৈতিকভাবে রেষারেষি করতে গিয়েই কার্যত এই হাল ইমরান খানের দেশের। রাওয়ালপিন্ডিতে এখন সাধারণ এক কাপ চায়ের দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ টাকা। পাকিস্তানি এক সংবাদপত্রের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এক চা ওয়ালা জানান, আগে এই চায়ের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা, যা বর্তমানে ৪০ টাকায় গিয়ে পৌঁছেছে। তিনি জানান, এর জেরে রোজই কমে যাচ্ছে খরিদ্দার। যারা নিয়মিত দু’কাপ চা খেতে নেতারাও এখন এক কাপ চায়ে কাজ সারছেন। অন্যদিকে ৪০ টাকার কমে চা বিক্রি করলে প্রতি কাপে দু টাকাও লাভ থাকবে না তার।
আসলে চায়ের দামের এই মূল্যবৃদ্ধির একটা বড় কারণ হল চিনির দাম বৃদ্ধি। এক কিলো চিনির দাম এই মুহূর্তে পাকিস্তানের দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১০ টাকা। একইসঙ্গে প্রতি লিটার দুধও সেঞ্চুরি পার করেছে। ১০৫ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকায়। একইসঙ্গে গ্যাসের দামও প্রায় ডবল হয়ে গিয়েছে। প্রতি সিলিন্ডার রান্নার গ্যাসের দাম পনেরশো টাকা থেকে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার টাকায়। যার জেরে এখন রীতিমত নাভিশ্বাস উঠছে জনতার। এক চা ওয়ালা জানিয়েছেন আগে প্রতিদিন তার ২৬০০ টাকা মত চা বিক্রি হত, আর জায়গায় এখন দিনে ১৫ টাকাও লাভ করতে পারছেন না তিনি। বিশেষত ছোট ছোট ব্যবসাগুলি ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই মূল্যবৃদ্ধির জেরে।
তবে চিনির ক্ষেত্রে অবশ্য ভারত থেকে সস্তা চিনি আমদানি করতে পারত পাকিস্তান। কিন্তু রাজনৈতিক রেষারেষি কাল হলো তাদের জন্য। এই বছর এপ্রিল মাস থেকেই ভারত থেকে চিনি আমদানি বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান। তারা জানায় কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে নিলে ভারত থেকে অন্যান্য জরুরি সামগ্রী আর নেবে না পাকিস্তান। এই জেদাজেদির বজায় রাখতে গিয়েই কার্যত বিপাকে পড়লে তারা। এখন মূল্যবৃদ্ধির জেরে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা পাক জনতার। যদিও ভারতেও মূল্যবৃদ্ধির মার সহ্য করতে হচ্ছে আমজনতাকে। রোজই বাড়ছে পেট্রোল ডিজেল ও রান্নার গ্যাস এবং ভোজ্য তেলের দাম। যা নিয়ে এখন যথেষ্ট অস্বস্তিতে কেন্দ্র সরকার।